এম.ইউছুপ রেজা, চট্টগ্রাম : নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিকদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। ১৩ এপ্রিল (রোববার) টাইগারপাসে চসিক সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিদের সাথে এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট ও বাজারের প্রতিনিধিদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আর দুই মাস পরে বর্ষার মৌসুম। আমি চাচ্ছি নগরীর যে সমস্ত এনজিও জলাবদ্ধতা অথবা সংশ্লিষ্ট কোন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছে তারা যৌথভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাজ করুক। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগ এনজিওগুলোর সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে।
সভায় উপস্থিত এনজিও প্রতিনিধিরা জানান, চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতা মুক্ত করতে প্লাস্টিক পলিথিনের বিনিময়ে খাদ্যদ্রব্য প্রদানের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে একাধিক এনজিও। এছাড়া,
পাবলিক টয়লেট স্থাপনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতেও কাজ চলছে। এ বিষয়ে এনজিওগুলো সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।
সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট এবং বাজারের সামনে অবৈধ হকার ও দখলদারদের কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং সরকারও মূল্যবান রাজস্ব হারাচ্ছে। এজন্য অবৈধভাবে ফুটপাত ও সড়ক দখল করা হকার ও দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। তারা বিভিন্ন বাজারে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের দাবি জানান। খাল-নালা দখল করার ফলে নগরীর বেশ কিছু বাজার ও মার্কেট বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় এজন্য খাল-নালাকে দখলমুক্ত করার দাবি জানান তারা।
মেয়র বলেন, অবৈধভাবে সড়ক, ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনার ফলে যানজট হয় এবং এসব ভাসমান হকারদের ফেলা ময়লায় নগরী ময়লা হয়। এছাড়া এদের ফেলা বিভিন্ন ফলের খোসাসহ পিচ্ছিল জিনিসের জন্য মোটরসাইকেল আরোহীরা দুর্ঘটনার শিকার হন। মেয়র আরও বলেন, চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একগুচ্ছ
পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। তবে, নগরীকে ক্লিন সিটি হিসেবে গড়তে নগরবাসীর সহায়তা প্রয়োজন। নগরীর পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চসিকের স্পেশাল ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ৪১ টি ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালিত হবে। অভিযানে কারো বাসার সামনে ময়লা পাওয়া গেলে অথবা যত্রতত্র ময়লা ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা
নেয়া হবে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সামনে বাধ্যতামূলকভাবে বর্জ্যের বিন রাখতে হবে। কোন প্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা পাওয়া গেলে অথবা কোন প্রতিষ্ঠান বিশেষত কাঁচাবাজার, কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল, রেস্তোরা, হাসপাতাল ইত্যাদির আবর্জনা যত্রতত্র ফেললে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ জেল-জরিমানা করা হবে। নগরীর পরিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে পলিথিন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে অভিযান চলবে। ফুটপাত, সড়ক, নালা-খাল অবৈধ দখল মুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান চলবে। নির্মাণ সামগ্রী রাস্তায় রেখে চলাচলের পথ সংকীর্ণ করলে মালামাল জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাইলিং এর মাটি নালায় ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকানের সামনে মালামাল রেখে ফুটপাত সংকীর্ণ বা বন্ধ করলে মালামাল জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমানসহ ব্যবসায়ী ও এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের মতামত তুলে ধরেন।