নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নে ভূমি বিরোধের জের ধরে ইয়াকুব নবী নামের ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। এই ঘটনায় পুলিশ এখনো কোন মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন ভিকটিমের স্বজনরা। তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ বলছে, নিহতের
ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে মামলা রেকর্ড করা হবে।
সোমবার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরআগে রোববার বিকালে উপজেলার মাহুতলা গ্রামের নুরু মাকের্ট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াকুব নবী উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের মাহুতলা গ্রামের মৃত মুকবুল আহাম্মদের ছেলে।
নিহত ইয়াকুব নবীর ছেলে নাছির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বৃদ্ধা ইয়াকুব নবীর এক খন্ড জমি নিয়ে একই বাড়ির শাহ আলমদের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে শাহ আলম একাধিকবার আমাদের পরিবারের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আমাদেরকে বাড়ি ছাড়া করে। এক পর্যায়ে ওই বিরোধ নিয়ে আজ সোমবার শালিস বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও শাহ আলম গতকাল রোববার বিকালে একই বাড়ির অভি, রুবেল, আনোয়ার, রতনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের ওই জমি জোরপূর্বক দখল
করতে গেলে বাঁধা দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা আমার বাবা এবং আমাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীদের পিটুনিতে আমার বাবা ইয়াকুব নবী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে সোনাইমুড়ি
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাগিনা খোকন বলেন, শাহ আলমসহ উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা স্বীকৃত মাদক ব্যবসায়ী ও আওয়ামী সন্ত্রাসী। তারা আমার মামার জমি জোরপূর্বক দখল করতে গিয়ে বাঁধার সম্মূখিন হওয়ায় আমার মামাকে অর্তকিতভাবে হামলা করে বুকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে আমরা থানায় যাওয়ার আগেই সন্ত্রাসীরা থানায় হাজির হয়ে যায়। পরবর্তীতে
আমরা থানায় মামলা দিলেও পুলিশ আমাদের মামলা নিচ্ছেন না।
বৃদ্ধা ইয়াকুব নবী হত্যাকান্ডের মামলা গ্রহণসহ সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ন্যায় বিচার দাবি করেন নিহতের স্বজনরা।
এদিকে, শাহ আলমসহ অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম জানান, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধ মিমাংসায় আজ সোমবার শালিস বৈঠকের কথা ছিল। কিন্ত গতকাল বিরোধকৃত জমির বেড়া খুলতে গেলে বয়স্ক ব্যক্তি বেড়া আটকাতে যায়, তখন তিনি ওখানে স্টোক করে ওখানেই মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড করা হবে।