ফরিদপুরে মাদক জব্দের প্রতিবাদে ৭টি বাড়ি ভাংচুর-লুটপাট করলো মাদক ব্যবসায়ীরা
হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিপুল পরিমাণ মাদক আটকের পর নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর প্রতিশোধ নিতে ৭টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে চিহ্নিত এক মাদক-কারবারির বিরুদ্ধে। এ সময় স্থানীয় বেশ কয়েক জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
সোমবার (২৪ মার্চ) দিনগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোতাশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বোয়ালমারী ইউনিয়নের সোতাশী এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি, একাধিক মাদক মামলার আসামি মতি কাজী দীর্ঘদিন ধরে এলাকাটিতে বেপরোয়াভাবে মাদক কারবার চালিয়ে আসছিলেন। তিনি ওই গ্রামের দাউদ কাজীর ছেলে। এলাকায় মাদক-সম্রাট ইয়াবা মতি মেম্বার নামেই তিনি সর্বাধিক পরিচিত। মতি কাজী স্থানীয় আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় দিকে ফরিদপুর জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম মতি কাজীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়ে মতি কাজী। আভিযানিক দল মতি কাজীর মায়ের ঘরের একটি বাক্স থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করে। এসময় মতি কাজীর ছোট ভাই আরেক মাদক কারবারি ইসলাম কাজীকে আটক করে অভিযানকারী টিম। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করে এলাকাবাসী। পরে আটক ইসলাম কাজীকে ছেড়ে দেয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন। তিনি ছাড়া পেয়ে মিষ্টি বিতরণ করায় মতি কাজীর নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের একটি বাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাত সাড়ে আটটার দিকে ৭ টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট চালায়। এসময় বাড়ির বেশির ভাগ লোক তারাবি নামাজ পড়তে মসজিদে ও পার্শ্ববর্তী মমিন মার্কেটে আড্ডা দিচ্ছিল।
হামলায় বিএনপি সমর্থক গ্রামটির ইউসুফ মণ্ডলের ছেলে বাবর মণ্ডল (২৮) ও রিজাউল শেখের ছেলে মো. মুজাহিদ শেখ সহ(২৩) বেশ কয়েকজন মারাত্মক আহত হন। তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলায় যে সব বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, সোতাশী গ্রামের হাসেম শেখের ছেলে কামরুল শেখ, শরিফুল শেখ, নুরু মাতুব্বরের ছেলে কুবাদ শেখ, আজিত মাতুব্বরের ছেলে কবির মাতুব্বর। ও আবু শেখের ছেলে তারা শেখ। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে স্থানীয় মমিন মার্কেটের সামনে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মতি কাজী ও তার পরিবারের লোকজন আত্মগোপন থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।