মো রায়হান আবিদ, বাকৃবি সংবাদদাতা : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দলের ইফতার মাহফিলে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সংগঠনের একাধিক সদস্য দাবি করেছেন, ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত ওই ইফতার মাহফিলে ২০ জনের বেশি আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন, যাদের অনেকেই গত ৪ আগস্টের "শান্তি মিছিল"-এ অংশ নিয়েছিলেন।
এই ঘটনায় সোনালী দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, "যারা আওয়ামীপন্থীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার।"
তবে সংগঠনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান বিষয়টিকে "সামাজিক সৌজন্যতা" হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে, "কেউ ইচ্ছায় ইফতার মাহফিলে যোগ দিলে তা রাজনৈতিকভাবে দেখা ঠিক নয়।"
সোনালী দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আলী রেজা ফারুক বিষয়টিকে "পারিবারিক ইফতার মাহফিল" বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, "এটি রাজনৈতিক কোনো আয়োজন ছিল না।"
সোনালী দলের কৃষি অনুষদীয় কমিটির সভাপতি ও কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন জানান, আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতেন না।
আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পশুপালন অনুষদীয় কমিটির সভাপতি এনিম্যাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আহসান কবীর বলেন, "আমি শুধু ইফতারে উপস্থিত হয়েছি। এই আয়োজনের সাথে যুক্ত ছিলাম না।"
তবে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত একাধিক আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষক জানান, তাদের সিনিয়র সোনালী দলের নেতারাই দাওয়াত দিয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে সোনালী দলের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভদেখা দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় বিতর্কের জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট "শেখ হাসিনাতেই আস্থা" স্লোগানকে সামনে রেখে কেআইবি ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের যৌথ উদ্যোগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, বাকৃবি শাখার নেতৃত্বে "শান্তি সমাবেশ ও মিছিলে" অংশগ্রহণ করেছিল এমন অনেক জুনিয়র শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অরাজনৈতিক ব্যক্তি কিংবা অন্য কোনো দলের কাউকে বিএনপিতে যোগদান করানো যাবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এই নিয়েই আলোচনার ঝড় উঠেছে সোনালী দলের শিক্ষকদের মাঝে।