ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিপণ দিয়েও বাঁচানো গেল না কলেজছাত্রকে, ২৫ দিন পর মরদেহ উদ্ধার
মো. জাকির হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক যুবককে অপহরণ করেছিল একটি চক্র। তবে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে জীবিত পেল না পরিবার। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মিলনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার মো. মতিয়র রহমানের ছেলে মো. সেজান আলী। আরেকজনের নাম পাওয়া যায়নি। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ জাহিদুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে এই বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ। কোন ক্লু পাচ্ছিলাম না। প্রযুক্তির সহযোগিতায়া দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্বীকার করে তারা মিলনকে খুন করেছে ও তাদের দেখানো মতে মরদেহ করা হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া সেজান আলীর বাড়ির পাশেই একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে আজ বৃহস্পতিবার মিলনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, ‘মিলনকে অপহরণে ঘটনায় গত বুধবার রাতে আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে ও তাদের দেখানো মতে আমরা স্থানীয় স্বাক্ষীদের সামনে মরদেহ উদ্ধারের কাজ করি।’
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজ পড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮ টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়েই নিখোঁজ হন মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা।
প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন আরও বেড়ে ১০ লাখ হয়। তিন দিন পরে ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সবশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র। গত ৯ মার্চ রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেয় অপহৃত মিলনের বাবা পানজাব আলী।
২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ও ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খানগাঁও ইউনিয়নের চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। এদিকে মিলনের পরিবার জমি জায়গায় বিক্রি ও ধার-দেনা করে ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে জীবিত না পেয়ে শোকে কাতর পরিবারের সদস্যরা।