শিরোনাম
◈ স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, প্রতি ভরি ১ লাখ ৫৫ হাজার ◈ দেড় ঘন্টার বেশি সময় পর ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ সমাপ্ত ◈ হিন্দুদের ওপর আক্রমণ ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক: মার্কিন সিনেটরকে প্রধান উপদেষ্টা ◈ অনুমোদন পেল ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’ নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় ◈ মুস্তাকিমের অনন্য রেকর্ড, ৫০টি চার ও ২২ ছক্কায় করেছেন ৪০০ রান, দল জিতেছে ৭৩৮ রানে ◈ ইতালি প্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুলকে জাতীয় দলে নেওয়ার দাবিতে লং মার্চের ডাক ◈ ঈদের আগে মার্চ মাসের বেতন পাচ্ছেন না ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী ◈ অসহায় গ্রামবাসীদের পাশে ফুটবলার হামজা চৌধুরী ◈ নিউজিল্যান্ডের কাছে টানা দুই ম্যাচ হেরে গেলো পাকিস্তান ◈ নেতাকর্মীদের আস্তে আস্তে খেতে বলার ব্যাখ্যা দিলেন বিএনপি নেতা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২৫, ১২:৫২ রাত
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভুল চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যু, ৪ লাখ টাকায় রফাদফা, চুক্তিপত্র ভাইরাল

কুমিল্লা নগরীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ইমরান হোসেন (২১) নামের এক তরুণের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রোগীর স্বজনদের চার লাখ টাকা দিয়ে রফাদফা করা হয়। এই রফাদফার চুক্তিপত্রের একটি কপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

রবিবার (১৬ মার্চ) রাতে কুমিল্লা নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকায় ট্রমা সেন্টার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর চিকিৎসায় তাদের কোনো অবহেলা বা ভুল ছিল না। ইমরান কুমিল্লা নগরীর দ্বিতীয় মুরাদপুর দক্ষিণপাড়া সর্দার বাড়ির প্রবাসী হুমায়ুন কবিরের ছেলে। তিনি পেশায় দরজির কাজ করতেন।

নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার চিকিৎসক ডা. মো. আতাউর রহমানের তত্ত্ববধানে ইমরানকে হাসপাতালের ভর্তি করা হয়।

এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শুক্রবার সকাল ১০টায় ইমরানের অস্ত্রোপচার শুরু হয়। চলে দুপুর পৌনে ২টা পর্যন্ত। ২৪ ঘণ্টা পর তার জ্ঞান ফিরলেও পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দেয়। পরে দ্রুত তাকে আইসিউতে নেওয়া হয়।

সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বিষয়টি রোগীর স্বজনদের অবগত করা হয়নি এমনকি বারবার চেষ্টা করেও রোগীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ রবিবার বিকেলে জোরপূর্বক আইসিইউতে গিয়ে দেখা যায় রোগীর কোনো সাড়াশব্দ নেই। কর্মরত ব্যক্তিরা বলেন, রোগীকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হবে। এরপর তারা লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যান।

বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেনি। এদিকে মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে জড় হতে থাকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও রোগীর স্বজনরা। ভাঙচুর করা হয় চেয়ারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির দুটি ভবনের বেশির ভাগ অংশের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়।

হাসপাতাল থেকে সরে পড়েন ডা. মো. আতাউর রহমানসহ বেশির ভাগ চিকিৎসক ও দায়িত্বরত কর্মীরা। খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ এবং পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিচার চেয়ে ইমরানের চাচা জাকির হোসেন বলেন, 'ভাতিজার চিকিৎসার পেছনে তিন লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আমাদের বলা হয়েছিল, অপারেশন খরচ ২৫ হাজার টাকা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা। যখন ভর্তি করি তখন বলেছিল, ঢাকা থেকে বড় সার্জন এসে অপারেশন করবেন, কিন্তু তারা কুমিল্লার ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করিয়েছে। তাদের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে।'

বিচার চেয়ে ইমরানের মা নাজমা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাল ছেলে হাসপাতালে গিয়েছে। ডাক্তার বলছেন, ছোট অপারেশন। আজ আমার ছেলেকে বাড়িতে মৃত আনা হয়েছে। ডাক্তার আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ ছফিউল্লাহ বলেন, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু, বিষয়টি সঠিক নয়। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রোগীর বড় ধরনের সমস্যা ছিল। 

ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু না হলে রোগীর স্বজনদের কেনো চার লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় সবার উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর বেশি মন্তব্য করতে পারব না।’

কুমিল্লা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রেজা সরোয়ার বলেন, বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।  

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়