বরিশাল নগরীতে চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার গণপিটুনিতে সুজন (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৫ মার্চ) রাত ৮টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। খবর: দেশ রুপান্তর।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান। এর আগে সন্ধ্যায় নগরীর ধান গবেষণা রোডে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়।
মৃত সুজন নগরীর ধান গবেষণা রোড এলাকার জিয়া নগরের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। পেশায় তিনি অটোরিকশাচালক ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশুর বাবা শনিবার সন্ধ্যায় থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগ অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুরে ওই শিশুকে নিজ বাসায় নিয়ে গিয়ে সুজন জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালান।
জানা যায়, ওই দিন দুপুর দেড়টার দিকে ভুক্তভোগী শিশুটি একটি রান্নার পাত্র ফেরত দিতে প্রতিবেশী সুজনের বাড়িতে যায়। তখন ঘরে সুজন শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এসময় শিশুটি চিৎকার দিলে অভিযুক্ত পালিয়ে যান বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুজনের মৃত্যু হয়।
তবে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, শত্রুতার জেরে সুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।
নিহতের মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার পোলায় আর অটো চালাইবে না। ওরে শত্রুরা চাপে ফালাইয়া দেড় লাখ টাকা দেনা বানাইছে। হেয়াও আমি শোধ করছি। আমার পোলারে বিভিন্ন রকম লোভ দেখাইয়া গাজাও বিক্রি করাইছে। হেই গাজা বেচতে না যাওয়ায় আমার পোলারে মারছে। গাছের লগে বাইনদা মারছে, কোপাইছে। আমার পোলারে যারা মারছে, হেগো বিচার চাই। চাইর বছরের মাইয়ারে যদি ধর্ষণ করে— হেই মাইয়া কেমনে হাইট্টা বাসায় যায়?’
এ বিষয়ে এসআই মানিক সাহা বলেন, লাশ শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর বাবার করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।