শিরোনাম
◈ আ. লীগের নেতা-কর্মীরা নিষিদ্ধ হলে কোথায় যাবে? ◈ বুয়েটে চান্সপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্র শান্ত বিশ্বাসের পাশে তারেক রহমান ◈ আমরা ৫ আগষ্টের পর নতুন একটি শব্দ শুনতে পাচ্ছি মব কালচার : ইশরাক  ◈ কুয়েটে রাজনীতিতে জড়ালে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল ◈ হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ নিজ বাসায় খুন ◈ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি লাইফ সাপোর্টে ◈ রাজধানীসহ সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে র‌্যাব ◈ কাফির বাড়ি পোড়ানোয় দুই পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার, জানা গেল তাদের পরিচয় ◈ ফরিদপুরে ছাগলের ঘরে তালাবন্দি বৃদ্ধকে উদ্ধার করলেন নির্বাহী কর্মকর্তা ◈ ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিপণের ২৫ লাখ দিয়েও ছেলেকে ফেরত পেলনা পিতা

প্রকাশিত : ১০ মার্চ, ২০২৫, ১১:২৮ রাত
আপডেট : ১১ মার্চ, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সৎমেয়েকে গরম ছুরি দিয়ে ঝলসে দিলেন বাবা

মানহা বিবি মরিয়মের দুরন্তপনা যেন থেমে গেছে। শিশুটি কেবল ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে, কিছুই বলে না। নরম শরীরে গরম ছুরির ছ্যাঁকার ভয় যেন তাড়া করছে চার বছরের এ অবুঝ শিশুটিকে। মায়ের প্রেমিকের অমানবিক নির্যাতনে শিশু মানহা ছটফট করছে অসহ্য যন্ত্রণায়। দিনের পর দিন মানহা ও তার মায়ের ওপর প্রেমিক শামসুজ্জামানের নির্যাতন চলেছে। কখনও ছুরি গরম করে তার শরীরে ছ্যাঁকা দিয়েছে, কখনও বেত্রাঘাত। খবর: সমকাল।

ছোট্ট মানহার শরীর জুড়েই শামসুজ্জামানের নির্যাতনের চিহ্ন। অসংখ্য পোড়া দাগ। প্রতিবাদ করলেই মানহার মাকে পেটাত শামসুজ্জামান। গাজীপুরে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা সংলগ্ন কলাবাগান এলাকার ফজলুল হকের বাড়িতে ভাড়া থেকে এভাবেই মা-মেয়ের ওপর চলত শামসুজ্জামানের নির্যাতন। 

অবশেষে শামসুজ্জামানের নির্যাতন থেকে মুক্তি পেয়েছে শিশুটি। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শ্রীপুর থানা পুলিশ মানহা ও তার মাকে উদ্ধার করেছে। রোববার রাতে তাদেরকে উদ্ধারের পর শামসুজ্জামানকে আটক করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 
 
জানা যায়, স্বামী মনির হোসেনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর রুমি আক্তার মেয়ে মানহাকে নিয়ে বেশ ভালো দিন কাটাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে ফেসবুকে পরিচয় হয় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় তলিয়াচাঁদপুর গ্রামের ইউসূফ আলীর ছেলে শামসুজ্জামানের সঙ্গে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মাস চার আগে মাওনার চৌরাস্তা এলাকার ফজলুল হকের বাড়ির একটি রুম ভাড়া নেন তারা। সঙ্গে ছিল মানহাও। রুমি তার মেয়েকে বাবা বলে শামসুজ্জামানকে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর থেকে মেয়েটি শামসুজ্জামানকে আব্বু আব্বু বলে পুরো ঘর মাতিয়ে রাখত।

এ দিকে বিয়ে না করেই সংসার করছিল রুমি ও শামসুজ্জামান। কিছুদিন যেতে না যেতেই বেরিয়ে আসে শামসুজ্জামানের আসল চরিত্র। নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতো বাসায়। ঘুম থেকে উঠেই শিশুটির ওপর চালাতো নির্যাতন। 

রুমি আক্তার বলেন, প্রতিবাদ করলেই আমাকে মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রাখত। গত চার মাস ধরে শিশুটির ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চলেছে। গত শুক্রবার রাতেও গ্যাসের চুলায় ছুরি গরম করে শিশু মানহার কাঁধ, হাত, ঘাড়, গলা, গাল ও কানে ছ্যাঁকা দেয় শামসুজ্জামান। ঘরেই আটকে রাখা হয় তাকে। রোববার সন্ধ্যার পর প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পান। রাতেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। জানানো হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। 

মানহার মা রুমি আরও বলেন, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মেয়েকে পাশের কক্ষে দরজা বন্ধ করে ছুরি গরম করে শরীরে ছ্যাঁকা দেয়। আমাকে ঘরে আটকে রাখে। কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পাশের ভাড়াটিয়ারা জেনে আমাদের উদ্ধার করে। 

মানহাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার মা রুমি আক্তারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে বলে  জানিয়েছে পুলিশ।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শামসুজ্জামানের সঙ্গে পরিচয় হয় রুমির। পরে তারা বিয়ে না করেই এক সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। মাদকাসক্ত শামসুজ্জামান শিশুটির ওপর অমানবিক নির্যাতন করেছে। রোববার রাতেই তাকে পুলিশ আটক করে নিয়ে আসে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতাহার শাকিলের ভ্রাম্যমাণ আদালত তার ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়