লক্ষ্মীপুরে 'ডাকাত আতঙ্ক', রাতজেগে এলাকাবাসীর পাহারা
জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে গত দুইদিন ধরে 'ডাকাত' আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডাকাত আতঙ্কে রাতভর পাহারা দিচ্ছে স্থানীয়রা। তবে এখন পর্যন্ত কোন বাড়িতে ডাকাতির খবর পাওয়া যায় নি। স্থানীয়রা বলছেন কোন বাড়িতে ডাকাতি না হলেও ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে, তবে পুলিশ বলছেন আতঙ্কিত এলাকায় নিয়মিত আমাদের টহল রয়েছে।
জানা যায়, সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া, মোহাম্মদ নগর গ্রাম, লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী, জুগিরহাট, আবিরনগর, কুতুবপুর, ভবানীগঞ্জের আবদুল্লাপুর, ধর্মপুর, আলীপুর, চরভূতা সহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন গত মঙ্গলবার রাতভর ডাকাত আতঙ্কে ছিল। রাতভর সর্বত্র ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় কোন কোন ইউনিয়নের বাসিন্দারা লাঠিসোটা ও লাইট হাতে এলাকা পাহাড়ায় বেরিয়ে পড়ে। মসজিদের মাইকে মাইকে 'ডাকাত ডাকাত' বলে ঘোষণা দেয়। তার রেস গতকাল বুধবার রাতেও ছিলো। ঐসব এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় যুব সমাজ পাহারা দিতে দিচ্ছে এমন কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এখনও পর্যন্ত কোন ডাকাতির ঘটনা শোনা যায়নি, তবে কিছু কিছু জায়গায় ছোট ছোট চুরির ঘটনা ঘটেছে। আবার কেউ কেউ নাকি ডাকাত দেখেছেন। তাইতো দ্রুত গ্রামের পর গ্রাম ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক জায়গায় মসজিদে মাইকিং হওয়ায় তা আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানায় তারা।
লাহারকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব রামানন্দী আমেনা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শাহাদাত হোসেন বলেন, স্থানীয়রা ডাকাতের খবর দেওয়ায় গত মঙ্গলবার মসজিদের মাইকে মাইকিং করা হয়েছে। গত রাতেও চাঁদখালী বাজার সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যক্তি ৮-১০জন লোককে একসাথে দেখতে পান। লাইট মারার সাথে সাথে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। পরে আমাকে মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিতে বলে, আমি ঘোষনা না দিয়ে এলাকার কয়েকজনকে খবর দেই, এলাকার মানুষ রাত জেগে ডাকাত পাহারা দিয়েছে।
ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের যুবক মোঃ রাসেল বলেন, ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড চুটকি সাকু এলাকার আসলাম মুন্সি বাড়ি প্রবাসী কফিলের ঘরের সামনে কে বা কারা চিরকুট রেখে যায়, তাতে লেখা "যদি পিছনের লাইট দেছ, তাহলে মারি হালাইওম"। এমন চিরকুটে ঐ বাড়ির লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। এছাড়া চরমনসা, শরীফপুর, ধর্মপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে গত দুইদিন যাবত ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে, তবে এখনও কোন ডাকাত ধরা পড়ে নি।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মোন্নাফ বলেন, কয়েকটি এলাকায় ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, মসজিদে মাইকিংও হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দিবাগত রাতেও কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। রাতেই টহল পুলিশ ও সেনাসদস্যরা আতঙ্কিত এলাকাগুলো ঘুরে এসেছে। আমাদের পুলিশের রাতের টহল আরও জোরদার করা হয়েছে৷ কোনপ্রকার ডাকাতির ঘটনা যেন না ঘটে, আর জনমনে যেন এ বিষয়ে কোন আতঙ্ক তৈরি না হয় সে বিষয়ে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।