ইফতেখার আলম বিশাল, রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি হাফিজা বেগম হ্যাপি আটক হয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে এলাকার লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিয়ার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, হাফিজা বেগম হ্যাপি ১৯ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন এবং চন্দ্রিমা থানা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভা নেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি গা ঢাকা দেন।
গত সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কিছু বিতর্কিত ছবি ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে দেখা যায়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীদের সাথে হ্যাপি অনেক ছবি তুলেছেন। এছাড়া, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হেলমেট পড়ে এবং হাতে লাঠি নিয়ে হামলা চালানোর ছবিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
হ্যাপির বাড়ি চন্দ্রিমা থানার মোড় থেকে ৫০০ গজ উত্তরে বাররাস্তার মোড়ে। তার স্বামী সুজা উদ্দিন। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে, বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় তাকে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়। জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে নগরীর কোনো থানায় অভিযোগ বা মামলা না থাকলেও, ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
এদিকে, হ্যাপির আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন থানায় জড়ো হতে শুরু করে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হ্যাপি সরকার পরিবর্তনের পর ভিন্ন মতাবলম্বী মানুষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলায় হামলা এবং জমি দখল করে তিন তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় দালালি কাজের অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, সাবেক মেয়র লিটনের যাতায়াত ছিল তার বাড়িতে এবং তার মেয়ে সুমিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দিয়েছিলেন। তবে, ৫ আগস্টের পর সুমি আর নগর ভবনে যাননি।
চন্দ্রিমা থানার যুবদলের সাবেক সদস্য নাসিব (৩৫) অভিযোগ করেছেন, ৩ আগস্ট, হ্যাপি ও তার কর্মীরা তার বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে তার মা'র ওপর হামলা চালিয়েছিলেন এবং বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছিল।
এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানা পুলিশের ওসি মতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, স্থানীয়রা হ্যাপিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাকে “তদন্তে প্রাপ্ত” আসামি হিসেবে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে।