মধুখালীতে দু'জনকে কুপিয়ে সমিতির সাড়ে ১৫ লাখ টাকা লুট
হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বাগাট বাজারে ইফতারি করার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে স্থানীয় একটি সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কয়লা ব্যবসায়ী সহ দু'জনকে কুপিয়ে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টাকা লুট করেছে। গুরুতর আহতাবস্থায় তাদের ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিবাদে সোমবার (০৩ মার্চ) দুপুরে মানববন্ধন করেছে বাগাট বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
ওই সমিতির কর্মী পংকজ বিশ্বাস বলেন, আগেরদিন রোববার বিকেলে বাগাট বাজারের অগ্রসর সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির কার্যালয়ে বসে ইফতারির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ওই সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিলন শেখ (৩৮) ও তার মামা মোতালেব শেখ (৬০) এবং প্রতিষ্ঠানের আরো দুই কর্মী। এসময় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তাদের রড দিয়ে পিটিয়ে ও ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সমিতিতে রাখা ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। হামলায় ইকরাম শেখ এবং পংকজ বিশ্বাসও আহত হন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- আহত মিলনের মা রুপসী বেগম, নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল হাসান টিপু, বাগাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান ঝন্টু, সহ-সভাপতি আতিয়ার রহমান, আকরাম হোসেন, জাকির ফকির, আবীর হোসেন, মোশাররফ হোসেন, ছাত্রদল নেতা কনক হাসান মাসুদ প্রমুখ।
বক্তাগণ অভিযোগ করেন, কাটাখালির আলোচিত সিদ্দিক হত্যা মামলার আসামী হাফিজুল, ইমদাদুল, মোজাফফর, মামুন, শিমুল ও ফুরাদ সহ তাদের দলবল এ হামলা চালায়। এর আগে তারা বাগাট বাজারেও ডাকাতি করে।
আহতের মা রুপসী বেগম বলেন, তার ছেলে সমবায় সমিতি ছাড়াও ইট ও কয়লার ব্যবসা করে। ভাটার ইট বিক্রি ও কয়লার টিটি করার জন্য অফিসে টাকা রাখা ছিলো। এসময় তার ছেলে ও ভাইকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তারা সেই টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
মানববন্ধনে বক্তাগণ অভিযোগ করেন, কাঠমিস্ত্রীর কাজের আড়ালে এই সন্ত্রাসীরা বাজারের একটি দোকানে হাতুড়ি, রামদ, ছ্যান সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র মজুদ করে রাখে। ৫ আগস্টের আগে তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের হয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের উপর হামলায় অংশ নেয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এই সন্ত্রাসীরা এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। আমরা এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি।
এদিকে, মানববন্ধনের পর আহতদের স্বজনেরা বাজারে বিক্ষোভ করার সময় পাশেই সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রসহ অবস্থান নেয় বলে জানা যায়। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে মধুখালী থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান বলেন, ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছে। মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বিষয়টি সরাসরি দেখভাল করছেন। তবে সোমবার দুপুর পর্যন্ত কেউ এ ঘটনায় থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।