নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে নবম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে মো. মাসুদ আলম নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ মার্চ) সকালে শহরের হাউজিং এলাকায় অচেতন অবস্থায় অপহৃত স্কুলছাত্রীকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরআগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী স্কুলে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয় ওই স্কুলছাত্রী।
গ্রেফতারকৃত যুবক মো. মাসুদ আলম জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের মাদব সিংহ গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত মাসুদ আলম সৌদি আরব প্রবাসী। বিদেশে থাকা অবস্থায় গত কয়েক মাস যাবৎ মোবাইলে ও তার আগে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে উত্যক্ত করতো মাসুদ। এসব বিষয়ে ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে মাসুদকে বারণ করা হলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছাত্রীর কিছু আপত্তিকর ছবি তৈরি করে তাকে ব্লাকমেইল করে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারী বিদেশ থেকে দেশে আসে মাসুদ। গত ২৬ ফেব্রুয়ারী বিদ্যালয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মাইজদীর হাউজিং বাসা থেকে বের হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এরপর থেকে সে আর বাসায় ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হলে পুলিশ ভুক্তভোগীর মোবাইলের সবশেষ অবস্থান চট্টগ্রামে শনাক্ত করে। শনিবার ভোরে হাউজিং এলাকায় ভুক্তভোগীর বোনের বাসার সামনে ভুক্তভোগীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের লোকজন।
ছাত্রীর বরাত দিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ২৬ তারিখ সকালে মাসুদ ও তার কয়েকজন সহযোগী ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে অপহরণ করে চট্টগ্রামের একটি বাসায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে কোর্টে এফিডেভিটের মাধ্যমে তাকে বিয়ে ও পরবর্তীতে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করে মাসুদ। শনিবার ভোরে তাকে নিয়ে মাইজদী সিনেমাহলের সামনে এসে বাস থেকে নামলে মাসুদের চোখ ফাঁকিয়ে দিয়ে সে পালিয়ে আসে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে থানার এসআই স্পেস ল্যাভ চৌধুরী প্রমোজ এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ রাজগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মাসুদকে আটক করে। ভুক্তভোগীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় তার মা বাদি হয়ে ৪জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।