নিনা আফরিন ,পটুয়াখালী : পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাঁধা,হুমকী সহ একাধিক অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেছেন জামায়াতে ইসলামের আইনজীবী ফোরাম ‘ল’ইয়ার্স কাউন্সিল’। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে পুন:নির্বাচনের দাবী জানান তারা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টায় ভোট গণনা চলাকালে জেলা আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট ও ফলাফল বর্জন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে ‘ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের প্রার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর ও সভাপতি পদের প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী এডভোকেট নাজমুল আহসান।
এডভোকেট নাজমুল আহসান বলেন, ৫ আগষ্টের পর আমরা ভাবছিলাম এবার একটু সুষ্ঠ পরিবেশে ভোট দিতে পারবো। কিন্তু আজকে আমরা তাও পারলাম না। নির্বাচনে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হয়েছে। আমাদের ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে দেয়া হয়নি। পথে পথে আটকে দেয়া হয়েছে। ভোটারদের পেছনে পেছেনে বুথের মধ্যে প্রবেশ করেছে তারা। বুথের মধ্যে অনেক সময় ভোট দেখিয়ে দেয়া লাগছে এবং গোপন কক্ষের মধ্যে ভোটদানের ছবি মোবাইলে তুলে তাদেরকে দিতে বাধ্য করা হয়েছে। যার কারণে অনেক ভোটার ভোট দিতে আসেন নাই।
আমাদেরকে যারা ভোট দিবে মনে করছে তাদেরকেই প্রতিহত করা হয়েছে। আমরা সকাল ১১ টায় সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফ করে বলেছি এবং ভেতরে নির্বাচনের দায়িত্বে যারা ছিলো তাদেরকে বারেবারে দৃষ্টি আকর্ষন করার পরেও তারা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই আমরা আবার পুন:নির্বাচন চাই। বিচারবিভাগীয় সদস্যদের মাধ্যমে পুন:নির্বাচন করার দাবী জানাচ্ছি। আমরা চাই একটি সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। তানাহলে ভবিষ্যতে মানুষ আর ভোট দিতে পারবেনা।
তিনি বলেন, যে ভোটের অধিকারের জন্য এত মানুষের প্রাণ গেল, এত মানুষ পঙ্গু হলো সেই ভোটের অধিকারই আমরা পেলাম না। আমরা ভোটের সুষ্ঠ অধিকার চাই।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভেরতে প্রবেশ করে নাই, তারা বাহিরে ছিলো। আমরা ল’ইয়ার্স কাউন্সিল হতে বিভিন্ন পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করেছি। আমাদের প্রার্থীদের কোন ধরণের সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশার তিনজনই জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের। যার জন্য আমরা কোন সুবিচার পাইনি। বারবার বলার পরেও তারা সুষ্ঠভাবে ভোটের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমরা এ ভোটের ফলাফল ও ভোট গ্রহণকে বর্জন করছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচন-২০২৫ এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট মোহসীন উদ্দিন বলেন, জেলা আইনজীবী সমিতিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৪৬৫। এর মধ্য ৩৯৬ ভোট কাষ্ট হয়েছে। তাছাড়া জামায়াত প্রার্থীর সর্বোচ্চ ভোট ছিল ২০টি, সেখানে জামায়াতের সভাপতি প্রার্থী এডভোকেট নাজমুল আহসান ১৩৭ ভোট পেয়েছেন। তাঁর পরেও যদি ভোট নিয়ে অভিযোগ করেন,আমার কিছু করার নাই”।
উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারী মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন দুপুরে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের উপর হামলা ও মনোনয়নপত্র সংগ্রহে বাঁধা দেন বিএনপি পন্থীরা। সেক্রেটারী পদপ্রার্থী সহ তিন পদের প্রার্থীকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহই করতে দেয়া হয়নি। পরে এ ঘটনায় পাল্টপাল্টি মামলা হলে সিনিয়র আইনজীবীদের মধ্যস্থতায় সুষ্ঠু নির্বাচনের শর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়।