শিরোনাম
◈ বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা: কারাগার থেকে পালিয়েছেন ফাঁসির আসামি জেমি ◈ সাজেক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করে প্রশাসনের বার্তা ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক, অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ◈ শুক্রবার আত্মপ্রকাশ করছে ছাত্রদের নতুন দল ◈ দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা দরকার: তারেক রহমান ◈ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আসায় ক্ষতির মুখে দেশীয় টেক্সটাইল মিলস ◈ সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অনিশ্চয়তা! ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের আন্দোলনে আমাদের সংহতি রয়েছে : হাসনাত আব্দুল্লাহ  ◈ বিএনপির বর্ধিত সভায় চার হাজার লোকের সমাগম হবে, তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন : এ্যানী ◈ নিউজিল্যান্ডকে ২৩৭ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৫:০২ বিকাল
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কিশোরগঞ্জে এলজিইডির গাফিলতি,  দৃশ্যমান হয়নি ১৭৭ কোটি টাকার সেতু

ফারুকুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে ১৭৭ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ১০৮ টাকা ব্যয়ে নির্মিত অষ্টগ্রামের বাংগালপাড়া মেঘনা নদীর উপর এক কিলোমিটার ব্রিজের কাজ ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর শুরু হলেও ২ বছর ৩ মাস অতিক্রম হলেও দৃশ্যমান না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
 
সরেজমিনে সেতু এলাকায় দেখা যায়, নির্মাণাধীন সেতুর মেঘনা শাখা নদীর উত্তর পাড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। তবে ওই অফিসে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে পাওয়া যায়নি, অফিসের লোক কিন্তুু নাম বলতে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তিকে পাওয়া গেলেও তিনি ওই সেতু নির্মাণের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। সেতুটি ২৮ পিলারের ওপর নির্মিত হওয়ার কথা থাকলেও দুই পাড়ে ২৫টি পিলারের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৬টির। আর কাজ শুরু হয়নি ১০টির। তবে এখনো কাজ শুরু হয়নি নদীর মধ্যের মূল তিন পিলারের।
 
স্থানীয়রা বলছেন বিগত হাসিনা সরকারের তিন মেয়াদে থাকা কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ  সদস্য রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক হাওরে উন্নয়নের নামে বেশ কিছু অপরিকল্পিত কাজ করেছে সেগুলোর মধ্যে এই ব্রিজটি অন্যতম। আর তার এসব অপরিকল্পিত কাজ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে কিশোরগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম। আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন ব্রিজের কাজ পরিদর্শনে একবার আসলেও সরকার পরিবর্তনের পর কোনো তদারকি করেননি তিনি। ওই প্রকৌশলীর গাফিলতির কারণে প্রকল্পের আর ৮ মাস বাকি থাকলেও ব্রিজটি দৃশ্যমান না হওয়ার কারণ বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। 
 
তারা আরো জানান, এই ব্রিজের কাজ সম্পন্ন  হলে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের বাংগালপাড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ব্রিজ দিয়ে হেঁটে হাটবাজার করতে সুবিধা হতো।
 
অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রেজাউল হক বলেন, ব্রিজের কাজ বর্তমানে চলমান আছে। তবে জমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও স্থানীয় লোকজনের বাঁধায় এ কাজের ধীরগতি। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পামি লিমিটেডের পরিচালক আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী থাকায় বর্তমানের তিনি বিদেশে আছেন। এর ফলেও কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আগামী বছর এ কাজ সম্পূর্ণ হবে।
 
তমা কনট্রাকশনের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র জরিপ ইঞ্জিনিয়ার মো. বুলবুল বলেন, “ব্রিজের কাজ চলমান আছে। ব্রিজের ২৮টি পিলারের মধ্যে ৬টি পিলার  ও ৩টি গার্ডার সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ৪টি গার্ডারের কাজ চলমান আছে। সব মিলিয়ে  ৩৮% কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলা যায়। আর আমাদের এমডি আওয়ামী লীগের নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন, তবে এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। ব্রিজের ধীরগতির বিষয়ে বলতে গেলে এখানে ব্রিজ হওয়ার আগে এখানকার মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ ছিল এখন তাদের আচরণে মনে হচ্ছে এই ব্রিজ তাদের প্রয়োজন নেই। তাদের বাঁধায় কয়েকবার কাজ বন্ধ হয়েছে। স্থানীয়রা জায়গা দিতে চায় না।
 
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ শাহ আলম মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ওইপাশে রোপনকৃত কিছু গাছ কাটার প্রয়োজন হলে সেখানকার লোকজন গাছ কাটতে বাধাগ্রস্থ করে। ফলে ব্রিজের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
 
 কিশোরগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আমিরুল ইসলাম বলেন, "আমরা সবসময় তদারকির মধ্যেই আছি। আমরা কখন যাবো, কখন যাবো না সেটাতো এলাকাবাসী কাছে জিজ্ঞেস করে যাবো না? আমাদের সিনিয়র কনসালটেন্টগণ প্রতিমাসে সাইট ভিজিট করছেন। ওইখানে এলাকাবাসীর সহযোগিতার অভাব। অষ্টগ্রামের থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আরো বেশি সমস্যা। তারা কাজ করতেই দেয় না। এ ছাড়া হাওর এলাকায় মৌসুম কম থাকায় কাজ করা যায় না। আর ব্রিজটি অপরিকল্পিত বলা যাবে না। কারণ, হাওর দুর্গম এলাকা হওয়ায় জেলা শহর ও রাজধানীর ঢাকা শহরে যাতায়াত করতে হলে লঞ্চ বা ট্রলারে একদিন রাত যাপন করে পরদিন গ্রামে আসতে হতো। আর এখানে এ সেতু নির্মাণ হলে রাজধানী ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কপথে সারা বছর যোগাযোগ করা যাবে। এর ফলে হাওরের কৃষি পণ্য ও মিঠা পানির মাছের ন্যায্যমূল্য পাবে হাওরবাসী।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়