কল্যাণ বড়ুয়া, বাঁশখালী(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বৈলছড়ির পুর্ব চেচুরিয়ায় আনন্দময়ী এগ্রো ফার্মের ব্যবসায়ী সুমন সিকদার ডাবলু (৩৭) বিগত ১৭ ফেব্রয়ারি থেকে নিখোঁজ রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা এবং সহযোগি ব্যবসায়ীরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নিয়ে না পেয়ে বাঁশখালী থানায় ৯৯৪ নং জিডি (১৯ ফেব্রয়ারি) এবং চান্দগাঁও র্যাব ৭ কার্যালয়ে, আরপি ৪৭ (২০ ফেব্রয়ারি) করা হলেও কোন সন্ধান না পাওয়াতে চরম দুচিন্তায় রয়েছে।
জানা যায়, বাঁশখালীর বৈলছড়ির পুর্ব চেচুরিয়ায় আনন্দময়ী এগ্রো ফার্মের ব্যবসায়ী সুমন সিকদার ডাবলু গরু কেনার জন্য ১৬ ফেব্রয়ারি সকাল ৬টায় গরু কেনার জন্য বের হয়। সে বান্দরবান গিয়ে তাদের আত্নীয় পুলিশে কর্মরত রুপম দেবদাশ এর বাসায় রবিবার রাতে ছিল।
সোমবার সকালে বাসা থেকে বের হয়ে তার অপর সহযোগি ব্যবসায়ী সাজু তালুকদার কে টেলিফোন করে বলে ৫টি গরু কেনা হয়েছে। আরো কয়েকটা গরু কিনব, তবে এলাকার ভিতরে ডুকলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে না বলে জানান। একই কথা স্ত্রী রুম্পা ঘোষ (সিকদার) কে এবং বৌদি রশ্মি সিকদারকে বলে।
এরপর থেকে মোবাইলে যোগাযোগ করতে না পেয়ে অপর ব্যবসায়ী সাজু তালুকদার সহ পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর করে না পেয়ে সাজু তালুকদার বাঁশখালী থানায় ৯৯৪ নং জিডি (১৯ ফেব্রয়ারি) এবং চান্দগাঁও র্যাব ৭ কার্যালয়ে, আরপি ৪৭ (২০ ফেব্রয়ারি) আবেদন করে। এর মধ্যে ২০ ফেব্রয়ারি সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের সময় সাজু তালুকদার কে ফেনী থেকে ফোন দেয় (০১৩১৮০০৭৮৬১) থেকে কল দিয়ে বলে ফেনীতে পাওয়ার কথা বললে পরে সেটার সত্যতা না পাওয়া সে বিষয়টি র্যাব ৭ কে জানানো হয়,পরে সত্যতা পাওয়া যায়নি।
২০ ফেব্রয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ২০মিনিটে স্ত্রী রুম্পা ঘোষ এর কাছে ফেইসবুকের মেসেঞ্জারে সাদিয়া আক্তার নামে একটা আইডি থেকে ভিড়িও কল দিয়ে একটা ভিডিও দেখায় আর কথা বলে না। তবে স্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ দেখতে চাইলে কেটে দেয় কোন কথা বলে না। বাঁশখালীর বৈলছড়ি ইউনিয়নের পুর্ব চেচুরিয়ার মৃত মিলন সিকদার ও মল্লিকা সিকদার এর ২ ছেলের মধ্যে তারজেন সিকদার বড় আর ছোট সুমন সিকদার ডাবলু। তাদের ৩ বোন সহ বিগত ৭ মাস আগে বিয়ে করে রুম্পা ঘোষ (সিকদার)কে।
নানা সামাজিক কাজ সহ বিগত ২২ সাল থেকে রুপম দেবদাশ,সাজু তালুকদার,সুমন সিকদার ডাবলু ৩জন মিলে আনন্দময়ী এগ্রো ফার্মের মাধ্যমে ব্যবসা করে আসছে। বিগত আগষ্টের পর সব গরু বিক্রি করে ফার্মেরটি সংস্কার করে আবার গরু কেনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সুমন সিকদার ডাবলু। নিখোঁজ সুমনের বড় বোন মিতা ঘোষ বলেন,কেউ যদি মুক্তিপনের জন্য আটক করলে তো কল আসতো ,এখনতো কেউ কল করেনি তাই বড় দুচিন্তা হচ্ছে ভাইয়ের জন্য বলে তিনি জানান। নিখোঁজের স্ত্রী রুম্পা ঘোষ আকুঁতি জানিয়ে বলেন, যে কোন কিছুর বিনিময়ে আমার স্বামীকে ফিরিয়ে পেতে প্রশাসন সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। সুমনের বোনের জামাই বলেন, আমরা পিবিআই এর সহযোগিতায় মোবাইল ট্রেকিং করে জানতে পেরেছি, ১৭ ফেব্রয়ারি সোমবার সুমন প্রথমে বান্দবানের লামা যায়, এরপর সাতকানিয়ার কোরানী হাট আসে। এরপর থেকে মোবাইল বন্ধ কোন লোকেশান পাওয়া যাচ্ছে না। শেয়ার ও সহযোগি ব্যবসায়ী সাজু তালুকদার জানান, সুমনের প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। তাই সে যেটা বলে সেটা অনুসারে আমরা কাজ করি, তারই অংশ হিসাবে আনন্দময়ী এগ্রো ফার্মের ২২/২৩ সাল থেকে যৌথ ভাবে ব্যবসা করে আসছি। তার কাছে গরু বিক্রির এবং কেনার টাকা থাকে। এছাড়া অনেক সময় গরু কেনার জন্য বিক্রেতাদের আগে টাকা দেওয়া হয়। ফার্মে বর্তমানে কোন গরু নেই, নতুন করে আবার কেনার জন্য বের হয় বলে জানান সে।
বৈলছড়ি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিকাশ দত্ত বলেন, নিখোঁজ ব্যবসায়ী সুমন সিকদার ডাবলু সর্¤úকে আমার ভাগিনা। প্রথম থেকে আমি অবগত ছিলাম না। কাল থেকে জানার পর সব জায়গায় খোঁজ নিচ্ছি এবং থানা প্রশাসনকে খোঁজে পেতে সহযোগিতা কামনা করছি। বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ী সুমন সিকদার ডাবলু নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় সাধারন ডায়েরী করার পর থেকে সকল থানা ও সংশ্লিষ্টদের অবহিত এবং সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :