ইফতেখার আলম বিশাল, রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) এক নারীর ঘরে অবস্থান করার সময় স্থানীয়দের গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নেয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাতবাড়িয়া মহল্লার এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন এএসআই সোহেল রানা। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা তাঁকে আটক করে ঘরের দরজা বন্ধ করে মারধর করে। ওই নারীকেও পেটানো হয়। এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সোহেল রানা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় কর্মরত। ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয়রা তাঁকে নানা প্রশ্ন করছেন এবং ফাঁকে ফাঁকে লাঠিপেটা করছেন। এএসআই দাবি করেন, তিনি ওই নারীকে ‘কলমা করে’ বিয়ে করেছেন। তবে নারীর স্বামী জানান, তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। ওই নারীও মুখে মুখে তালাক দেওয়ার কথা বলেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এএসআইয়ের সঙ্গে ওই নারীর অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। খবর পেয়ে স্থানীয়রা গিয়ে তাঁকে আটকে রাখেন এবং থানায় খবর দেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেক বলেন, ‘ মঙ্গলবার রাতে এএসআই সোহেল রানাকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওসি বলেন, এএসআই ও ওই নারীর বিয়ে বা সম্পর্কের বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য আমার কাছে নাই। তবে ওই নারীর স্বামী মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে দেড় বছর কারাগারে ছিলেন। এ সময়ে তাঁর স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যান। জামিনে মুক্তি পেলেও স্ত্রী তাঁর কাছে ফিরছিলেন না। ওসি আরও জানান, এএসআই সোহেল রানা ওই নারীকে পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে অটোরিকশা কেনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ভাড়ার টাকা নিতে তিনি মাঝেমধ্যে সেখানে যেতেন। মঙ্গলবার রাতেও তিনি টাকা আনতে গিয়েছিলেন, তখনই এ ঘটনা ঘটে। প্রকৃত ঘটনা জানতে তদন্ত চলছে।
এব্যাপারে আরএমপি পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই নারী বা তার স্বামীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা হয়নি। তবে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় এএসআই সোহেলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। এবং চন্দ্রিমা থানা থেকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :