জীবিকা নির্বাহে পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে গারো পাহাড়ের কোচ নৃগোষ্ঠীর নারীরা
তপু সরকার হারুন শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সীমান্তবর্তী এলাকার কোচ নৃগোষ্ঠীর নারীরা কর্মে এখন পিছিয়ে নেই। উপজেলার গারো পাহাড়ের রাংটিয়া, শালচূড়া, ডেফলাই, গান্ধীগাঁও,বাকাকূড়া, হালচাটি, গজনী, পানবর, নকশী, ভালুকা তাওয়াকুচা সহ বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামগুলোতে কোচ সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করেন। আর এ কোচ সম্প্রদায়ের নারীরাই জীবিকার দ্বায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
সীমান্তবর্তী এসব গ্রাম গুলোতে ছোট বড় প্রায় ৬ শতাধিক পরিবারে নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধ মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার কোচ নৃগোষ্ঠীর লোকজনের বসবাস। এসব পরিবারের লোকজন সনাতন ধর্মের অনুসারী ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবার প্রথায় বিশ্বাসী। জীবিকার ক্ষেত্রে কোচ নারীরাই প্রধানত কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। একসময় তারা গারো পাহাড়ে লাকড়ি কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। এবং তাদের মেয়েরা বিভিন্ন পার্লারে কাজ করে। তবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বর্ধিত সাংসারিক খরচ মেটাতে কোচ নারীরা সারা বছর জুড়ে কৃষি কাজে লিপ্ত আছেন।
রাংটিয়া এলাকার কৃষি জমিতে কাজ করার সময় কয়েকজন কোচ নৃগোষ্ঠী নারীর সঙ্গে কথা বললে তাদের মধ্যে জনমনি কোচ নামে এক কোচ নারী বলেন, সারাদিন এই ঠান্ডা পানিতে কাজ করে ৬ শত টাকা মজুরি পাই। " তাই দিয়ে বাজার খরচ, বাচ্চাদের পড়াশোনা ও অন্যান্য খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি । "
ওই এলাকার কষি শ্রমিক শুকিলা কোচ বলেন, আমরা কষ্টে জীবন যাপন করলেও সরকার আমাগো খোঁজ নেয় না। তাই সারা বছর যেটুকু কৃষি কাজ পাই তাই দিয়ে জীবন চালাই। "
নিরলা কোচ নামে আরেক কৃষি শ্রমিক তার সাথে কথা বললে তিনি জানান, কৃষি কাজ করেই তিন ছেলে মেয়েকে মানুষ করেছি। ঘরে বৃদ্ধ বাবা ও অসুস্থ স্বামীর দেখাশোনাও আমাকেই করতে হয়।
এবিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম রাসেল এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কোচ নৃগোষ্ঠীর স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের মাঝে সাইকেল, বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও তাদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য প্রাণি সম্পদ বিভাগ থেকে বিভিন্ন উপকরণ এবং সমাজ সেবা বিভাগ থেকে বিভিন্ন আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের জীবন মান উন্নয়নে সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :