কল্যাণ বড়ুয়া, বাঁশখালী(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে রঙিন ফুলকপিতে (হলুদ ও গোলাপি) ভরে গেছে সফল চাষী বদিউল আলমের ফসলী মাঠ । এ রঙিন ফুলকপি দেখতে ভিড় করলে ও সেটা রবিবার থেকে বাজারে বিক্রি করার জন্য তোলা হচ্ছে বলে জানান চেচুরিয়া গ্রামের চাষী বদিউল আলম । যিনি অল্প জায়গায় নানা ধরনের সবজি চাষ করে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে । ক্যারেনটিনা ও ভ্যালেনটিনা (হলুদ ও গোলাপি) রঙিন ফুলকপি চাষে সফল হয়েছে তিনি।
এ চাষী বাঁশখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় উপসহকারী কৃষি অফিসার
মোঃ ওচমান গনি ছিদ্দিকী সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ চাষাবাদ করেন বলে জানা যায় । বৈলছড়ির চেচুরিয়া গ্রামের কৃষক বদিউল আলম।
ক্যারেনটিনা জাত( হলুদ) ভ্যালেনটিনা (গোলাপি)ও স্নো হোয়াইট (সাদা) এ তিন জাতের চাষ ফুলকফি চাষ করে । তার মধ্যে ৫০ শতক জমির মধ্যে স্নো হোয়াইট ( সাদা) কফি চাষ হয়েছে ৪০ শতক এবং রঙিন ফুলকপি অর্থাৎ ক্যারেনটিনা ও ভ্যালেনটিনা (হলুদ ও গোলাপি) জাতের করা হয়েছে ১০ শতক। বর্তমানে স্নো হোয়াইট (সাদা) বিক্রি শেষ, দাম ভালো না পেলে ও রঙিন ফুলকপি বিক্রি করে ভালো লাভবান হবে বলে কৃষক আশাবাদী।
এসএসিপি (SACP) প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত এই ৫০ শতক প্রদর্শনীতে প্রকল্পের বিভিন্ন সার, বীজ,পরিচর্যা খরচসহ প্রযুক্তিগত বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে।
এদিকে ক্যারেনটিনা জাত( হলুদ) ভ্যালেনটিনা (গোলাপি) রঙিন ফুলকপি চাষাবাদ দেখে অনেকে আগ্রহ এবং রঙিন ফুলকপির পুষ্টি গুণ বেশি থাকায় চাহিদা ও বেশি, তাই এ রঙিন ফুলকপি পেতে আগে অনেকে বুকিং দিয়ে রাখছে বলে জানান কৃষক বদিউল আলম । সে জানান, সাদা ফুলকপি যেখানে বর্তমানে প্রতি পিছ ১০ টাকা সেখানেই রঙিন ফুলকপি প্রতি পিছ ৫০ থেকে ১০০টাকা চাহিদা রয়েছে,, বর্তমানে ৮০০ পিছ রঙিন ফুলকপি রয়েছে, যা কমপক্ষে প্রতি পিছ ৫০ টাকা বিক্রি করলে ৪০ হাজার টাকা পাবে বলে কৃষক আশাবাদী। কৃষক ও উপজেলা কৃষি অধ্প্তির সুত্রে জানা যায়, রবি মৌসুমের ক্যারেনটিনা জাত( হলুদ) ভ্যালেনটিনা (গোলাপি) রঙিন ফুলকপি চাষাবাদে বীজতলা থেকে শুরু করে সবজি সংগ্রহ করা পর্যন্ত মোট ৭০/৭৫ দিন দিন সময় লাগে।
রঙিন ফুলকপি একটি উচ্চমূল্যের ফসল এবং পুষ্টি গুণ ও অনেক বেশি এবং দেখতে ও সুন্দর এবং খেতে ও সুস্বাদু হয় । এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবু সালেক জানান,"সাদার চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি" সাদা, হলুদ, বেগুনি ও সবুজ রঙয়ের ফুলকপি এখন উৎপাদিত হচ্ছে। প্রচলিত সাদা ফুলকপির চেয়ে এসব রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি থাকে। হলুদ ফুলকপিতে ক্যারোটিনয়েড থাকে, বেগুনি রংঙের ফুলকপিতে থাকে অ্যান্থোসায়ানিন। ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্থোসায়ানিনে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করে, উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় হয়। কচুতে যে পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ থাকে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ থাকে হলুদ ফুলকপিতে। বাহ্যিক আবরণের কোষ, ত্বক, দাঁত, ও অস্থির গঠনের জন্য ভিটামিন এ জরুরি। রঙিন ফুলকপির আরেকটি বিশেষত্ব হলো অন্যান্য সবজির তুলনায় আয়রন ও ক্যালসিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। যা মানুষের রক্ত ও হাড় গঠন করে। রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩, বি-৫, বি-৬ এবং বি-১২) থাকে। ভিটামিন বি-২ বা রিবোফ্লাভিন মুখ বা ঠোঁটের ঘায়ের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া সবুজ ফুলকপি ভিটামিন ‘সি’ এর একটি ভালো উৎস।’ এছাড়া তিনি আরো বলেন,বাঁশখালী একটি কৃষিখাতে উর্বর এলাকা । এখানে সারাবছর নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হয়।
আপনার মতামত লিখুন :