গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি তাঁদের কয়েকজনকে আটক করে মারধর করেন। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করেন। এ সময় মসজিদের মাইকে মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। মাইকিং শুনে আশপাশের লোকজন বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। তাঁরা ভাঙচুরকারী কয়েকজনকে মারধর করেন।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঠান। সেখান থেকে গুরুতর আহত কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। জয়দেবপুর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কয়েকজনকে মারধর করা হচ্ছে।
তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মো. হিমেল, নাভিল আহাম্মেদ, মো. হাসান, গৌরব, শুভ, ইয়াকুব, অপু, বিশাল, ইমন হোসেন ও জাহিদুল ইসলামের নাম জানা গেছে। তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন মাহমুদা আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ১৫-১৬ জনকে তাজউদ্দীন মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ছাত্র–জনতার পরিচয় দিয়ে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় স্থানীয় লোকজন হামলাকারীদের আটক করে মারধর করেছেন। এতে ১২-১৩ জন আহত হয়েছেন বলে তাঁদের কাছে তথ্য রয়েছে।
এই হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের নেতা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমাদের কাছে খবর আসে ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে আমাদের শিক্ষার্থীরা রওনা হন। দ্রুত ১৫-১৬ জন ঘটনাস্থলে চলে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। এতে বাধা দিলে পেছন থেকে হুট করে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। তাদের হাতে রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই ১৫ জনকে ছাদে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরকেও পেটানো হয়।’
এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শনিবার ‘মার্চ টু গাজীপুর’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। উৎস: প্রথম আলো।
আপনার মতামত লিখুন :