গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। টানা আন্দোলনের ৪র্থ দিনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই হামলার ঘটনায় অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বর্ষা রানী, রবি সানি (১ম বর্ষ), ফরহাদ হোসাইন (৪র্থ বর্ষ), ইশরাত জাহান ইশা (৪র্থ বর্ষ), মাবিয়া আক্তার ((৪র্থ বর্ষ), তানজিল নাহিদ সিকদার (৪র্থ বর্ষ), তহোরা আক্তার (২য় বর্ষ), ফারিয়া আক্তার (২য় বর্ষ), মওমি আক্তার (৩য় বর্ষ), সানজিদা আক্তার (৩য় বর্ষ), রুবিনা আক্তার ( ৪র্থ বর্ষ), ইলমা আক্তার (২য় বর্ষ), রায়হান হোসেন (সাবিক শিক্ষার্থী), লামিয়া (১ম বর্ষ), আফসানা (২য় বর্ষ), ফারজানার (২য় বর্ষ) নাম পাওয়া গেছে। আহতদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী আহত শিক্ষার্থী মো. ফরহাদ হোসাইন জানান, গত ৩০ জানুয়ারি জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রভাষক (৯ম গ্রেড) শামসুন্নাহারকে শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে শহিদ তাজ উদ্দীন নার্সিং কলেজের ইনস্ট্রাক্টর (১০ম গ্রেড) এবং ৫ আগস্টের দোসর মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বিভিন্ন মহলে তদবির করে গত ২ ফেব্রুয়ারি আর একটি আদেশে প্রিন্সিপাল হিসেবে নিযুক্ত হন।
৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান চয়ন, রাতুল আলম সরকারসহ (৩য় বর্ষ) সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, জামাল উদ্দিন আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একজন বিরোধী ব্যক্তি হয়ে ৫ আগস্টের পর হঠাৎ বিএনপি সেজেছেন। এছাড়া জামাল উদ্দিন শিক্ষক হিসেবে অযোগ্যতা তার শূন্য শতাংশ। শ্রেণিতে পাঠদানের পরিবর্তে অপ্রাসঙ্গিক, অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বিভিন্ন সময় বলতেন রাজনীতি করার কারণে ক্লাশের প্রিপারেশন নিয়ে আসতে পারেননি এবং ক্লাশে সময় দিতে পারেননি। এছাড়াও ক্লাশ ম্যানেজমেন্টের তার কোনো দক্ষতা নেই। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে হেনস্তা করেন। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে প্রিন্সিপাল হিসেবে মেনে নিতে পারছে না। ফলে কলেজের প্রশাসনিক, একাডেমিক ভবনসহ প্রিন্সিপালের অফিস ও কলেজের প্রধান ফটকে তারা দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছেন।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে প্রিন্সিপাল জামাল উদ্দিন, তার বখাটে ও বহিরাগত ছেলে মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ইজহারুল ইসলাম, ফয়জউদ্দিন আহাম্মেদ ও সাকিবুল হাসানসহ একদল সন্ত্রাসী আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়। আহতদের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ওই হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরা জানান, আমি আনুমানিক ১৫-১৬ জনের চিকিৎসা দিয়েছি। আমার ডিউটির পর আহত আরও অনেকেই চিকিৎসা নিয়েছে।
উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রিন্সিপাল মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, আমি একটা জায়গায় আছি, অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছি। আমিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে ফোন দিয়েছি বললে পরে কল ব্যাক করবেন বলে কেটে দেন।
আপনার মতামত লিখুন :