শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা : কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের যুবদলের আহবায়ক ও ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে তৌহিদুল ইসলামকে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে তুলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলেও এ বিষয়ে যৌথ বাহিনীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নিহত যুবদল নেতা তৌহিদুল হাসানের আপন চাচাতো ভাই রবিউল ইসলাম জানান, শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) যুবদল নেতা তৌহিদের বাবা ও আমার চাচা মোখলেছুর রহমানের কুলখানী। তিনি চার দিন আগে মারা যান। তাই বৃহস্পতিবার(৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে আমরা বাড়িতে কুলখানীর জন্য গরু জবাই করি। রাত ২ টা বা ২.৩০ মিনিটের দিকে যৌথ বাহিনী বাড়ি থেকে তৌহিদকে তুলে নিয়ে যায়।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা পোনে বারটার দিকে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার এস আই মোরশেদ ফোনে জানান,তৌহিদের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা যেন দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। কুমেক হাসপাতালে আসার পর দেখি তৌহিদ আর নেই। সে মারা গেছে। চার দিন আগে মারা গেছে তার বাবা আর চারদিন পর যৌথ বাহিনী তৌহিদকে মেরে ফেলল। তার বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ নেই।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নিহত তৌহিদকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার কর্তৃব্যরত পুলিশ অফিসার এস আই মোরশেদ এই প্রতিবেদককে বলেন, সাড়ে ১১টার দিকে থানার ডিউটি অফিসার আমাকে জানান, স্যার যৌথ বাহিনী ফোন করে বলেছে, ঝাকুনীপাড়া গোমতী বিলাসে দ্রুত যাওয়ার জন্য। ওসি স্যারকে বলে আমি গাড়ি নিয়ে যাই। তখন যৌথ বাহিনী আমাকে তৌহিদকে নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু তৌহিদের অবস্থা বেগতিক দেখে আমি তাদেরকে বলি আমি একা নিব না। আপনারাও আসেন। কিন্তু তারা আসতে রাজি হয়নি। পরে আমি তৌহিদকে যখন গাড়িতে উঠাই তখনো তার জীবন ছিল। কিন্তু কুমেক হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।
এদিকে, নিহত যুবদল নেতা তৌহিদের স্বজনরা জানান,একই এলাকার ফজলু মিয়ার পুত্র তানজিম আহমেদের সাথে তৌহিদের জমি সংক্রান্ত ঝামেলা ছিল। তাদের অভিযোগ তানজিমরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে যৌথ বাহিনীকে তৌহিদের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করছে। যখন যৌথ বাহিনী তৌহিদকে আটক করে নিয়ে আসে তখন সাথে ছিল আরেক স্থানীয় রহমত আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম। তারাই যৌথ বাহিনীকে দিয়ে তৌহিদকে হত্যা করেছে বলে গণমাধ্যমকে জানান।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আমার দ্বারা কোন কিছু বলা সম্ভব না। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুমিল্লা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপি, আমড়াতলী ইউনিয়ন ও পাঁচথুবি ইউনিয়ন বিএনপি এক যৌথ বিবৃতিতে অবিলম্বে যুবদল নেতা তৌহিদ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :