বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে পেটানোর হুমকি দেওয়া চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ‘ছোট সাজ্জাদ’কে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে সিএমপি। তাকে ধরতে তথ্য দানকারী কিংবা সহায়তাকারীকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজের পক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। খবর বাসসের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. সাজ্জাদ হোসেনকে আইনের আওতায় আনার জন্য তার অবস্থান বিষয়ে সঠিক তথ্য দানকারীকে পুলিশের পক্ষ থেকে উপযুক্ত অর্থ পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হবে। সংবাদদাতা বা সহায়তাকারীর পরিচয় অবশ্যই গোপন রাখা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে ফেসবুক লাইভে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বায়েজিদ থানার ওসিকে বিবস্ত্র করে পেটানোর হুমকি দেয় সন্ত্রাসী সাজ্জাদ। লাইভে সাজ্জাদ বলেন, ‘ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাকে নগরের অক্সিজেনে ধরে এনে পেটাবেন। প্রয়োজনে মরে যাবেন। কিন্তু হার মানবেন না।’
পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ তার সন্তান হত্যায় জড়িত। তাকে যাতে বদলি করা হয়।’
এ ঘটনায় জিডি করেছেন ওসি আরিফুর রহমান। তিনি জানান, ফেসবুক লাইভে এসে সাজ্জাদের হুমকির ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। গত সোমবারও সাজ্জাদের সহযোগীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাজ্জাদের চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থানের কারণে পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে এই সন্ত্রাসী।
সর্বশেষ গত বছরের ৫ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন মোড়ে সাজ্জাদকে ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালায় সে। গুলিতে পুলিশের দুই সদস্যসহ মোট চারজন গুলিবিদ্ধ হয়।
পুলিশ জানায়, অপরাধ জগতে পা রেখে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠে সাজ্জাদ। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।
সাজ্জাদ বায়েজিদ বোস্তামী থানা সংলগ্ন হাটহাজারীর শিকারপুরের মো. জামালের ছেলে এবং সাজ্জাদ পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।
গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরের চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়া জাগরনী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে মাইক্রোবাস থেকে নেমেই স্থানীয় ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন তাহসীনকে (২৭) গুলি করে হত্যা করে সাজ্জাদ বাহিনী। তারও আগে ১৮ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকায় শটগান হাতে সাজ্জাদসহ আরও দুজন গুলি করতে করতে একটি নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশ করে মালিকের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
গত ২৯ আগস্ট বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার (৩২) ও মোহাম্মদ আনিস (৩৮) নামে দুজনকে হত্যা করা হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসা ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্বের জেরেই এ খুন হয়। এই চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডারের ঘটনার দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়। উৎস: দেশ রুপান্তর।
আপনার মতামত লিখুন :