শিরোনাম
◈ কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩ ◈ দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেসে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ পুড়েছে , কারফিউ জারি লুটপাট ঠেকাতে ◈ বোয়ালমারীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ ◈ বিএনপি কেন জামায়াতের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছে? ◈ "লিখছি মনের তাগিদে, বিবেকের তাড়নায়", মাসুদ সাঈদীর ফেইসবুক স্টাটাস ভাইরাল ◈ ৩৪টি চোরাই মোবাইলসহ সংঘবদ্ধ চোর চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার ◈ নিক্সন চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের গুঞ্জন, যা জানা গেল ◈ বিপিএলে টানা ৬ ম্যাচ হারলো চিত্রনায়ক শাকিব খানের ঢাকা ক্যাপিটালস  ◈ শেখ হাসিনা ও ভারত খাটো করে দেখেছিল ২০২৩ সালে রাশিয়ার দেওয়া সতর্কবার্তাকে   ◈ যা জানা গেল শনিবার স্কুল খোলা থাকার বিষয়ে 

প্রকাশিত : ১১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০১:৪২ রাত
আপডেট : ১১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

"লিখছি মনের তাগিদে, বিবেকের তাড়নায়", মাসুদ সাঈদীর ফেইসবুক স্টাটাস ভাইরাল

ম‌শিউর রহমান,না‌জিরপুর (পিরোজপুর) প্রতি‌নি‌ধিঃ আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর সেজ ছেলে ও জিয়ানগর উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান এবং জামায়াতে ইসলামী মনোনীত পিরোজপুর-১ আসনের এমপি প্রার্থী মাসুদ সাঈদীর ফেইসবুক স্টাটাস ভাইরাল হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) রাত ৭ টার দিকে তাঁর (ভেরিফাই) ফেইসবুকে এক স্টাটাসে যে লেখাটি ভাইরাল হয়েছে তা হুবহু তুলে ধরা হলো।

বিএনপির সহযোগী বা অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রোগ্রামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সম্পর্কে কিছু বিদ্বেষমূলক ফেষ্টুন ও মঞ্চে রাখা বক্তব্য বিএনপি জামায়াতের সম্পর্কের মধ্যে চরমভাবে বিভাজন উস্কে দেবে। আজকের এই প্রোগ্রামের পরে দেশবাসীর মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের অনুমোদন নিয়েই বিএনপির কিছু নেতা এসব বক্তব্য/বিবৃতি দিচ্ছেন কিনা? 

কথাগুলো লিখবো না ভাবছিলাম, তবুও লিখছি। কোনো রাজনৈতিক বা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে লিখছি না। লিখছি মনের তাগিদে, বিবেকের তাড়নায়... 

'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা' নামক যে ব্যবসা বিএনপি করতে যাচ্ছে সে ব্যবসা যে একটি অলাভজনক ব্যবসা এবং এতে চেতনা ব্যবসায়ী দল ও দেশের ক্ষতি হয়- তাতো এখন আর কাউকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। চেতনার এই ব্যবসা করে আওয়ামী লীগই তার পুঁজি ঠিক রাখতে পারে নাই, আর নব্য যারা এই ব্যবসা করার চেষ্টা করছেন তারা তো তাদের আম ছালা সবই শেষ করবেন। খাছিরাত দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ।

বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে জিজ্ঞাসা- আওয়ামী লীগ যা করে নিজে ও দেশটাকে ধ্বংস করেছে, সেইসব কাজ বিএনপির মতো জনপ্রিয় একটি দলের করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত? কতটা গ্রহণযোগ্য?

বরং দেশের মানুষ তো একথাই বলছে, ৭১'র চেতনা দিয়ে বিরোধী মতকে দমন করা, জামায়াত-শিবিরকে ধর্ম ব্যবসায়ী, র'গ কা'টা বলে ট্যাগ দেয়া, ৭২ এর সংবিধানে আস্থা রাখা— এসবের জন্য তো আওয়ামী লীগই ছিল, নতুন করে বিএনপিকে আর কি দরকার!
 
লীগের পথে কোনো কল্যাণ নেই। বরং লীগের পথ যারাই ধরবে, তাদেরকেও দেশের মানুষ বর্জন করবে, এটাই প্রমানিত। সুতরাং বিভাজনের রাজনীতি, সংঘাত-সংঘর্ষ সৃষ্টির রাজনীতি এড়িয়ে যাওয়াই কল্যাণকর। এসব চলতে থাকলে দুটি দলের সম্পর্কের মারাত্নক অবনতি হবে। উভয় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যুদ্ধংদেহী একটা অবস্থা সৃষ্টি হবে, যা মোটেই কাম্য নয়। ইতিমধ্যেই উভয় দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তিক্ততা সৃষ্টি হয়ে গেছে। এমন চলতে থাকলে দিনশেষে তা আরো বাড়তে থাকবে এবং তাতে ক্ষতি হবে দেশের, ক্ষতি হবে জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দেশের আশি ভাগ জনগোষ্ঠীর।

২০০১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ ২৩ বছরে একটি বারের জন্য বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে শিবিরকে র'গ কা'টার দল বলে মনে হয় নাই, জামায়াতকে ধর্ম ব্যবসায়ী মনে হয় নাই এমনকি জামায়াতকে রা'জা'কা'রও মনে হয় নাই— কিন্তু ২৩ বছর পর হঠাৎ করে বিএনপির কিছু নেতার কাছে জামায়াতকে ধর্ম ব্যবসায়ী আর রা'জাকা'র মনে হলো কেন?

তাহলে কি বিএনপি এতদিন ভুল পথে ছিলো? তাহলে সে ভুলের জন্য তো বিএনপিকে আগে জাতির সামনে ক্ষমা চাওয়া উচিত, এরপর তাদের নতুন বক্তব্য জাতির সামনে পেশ করা উচিত। কিন্তু শুধু ভিন্ন মতের কিছু ভোট পেয়ে সরকার গঠনের আশায় আওয়ামী স্টাইলের বক্তব্য/বিবৃতি কিংবা জাতিকে আবারো বিভাজনের রাজনীতির দিকে ঠেলে দেওয়া উচিত নয়।

আপনারা- সব দলের রাজনৈতিক নেতারা বলুন! 'গনতন্ত্র' আর 'ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার' কথায় আর কতকাল এই দেশের জনগনকে র'ক্ত' দিতে হবে? আর কতকাল এ দেশের মানুষকে জীবন দিতে হবে? আর কতকাল এ দেশে বিভাজনের রাজনীতি চলবে? আর কতকাল পরে এ দেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে? কবে আপনারা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন? কবে আপনারা এ দেশকে 'মানবিক মূল্যবোধের বাংলাদেশ' বানাবেন? কবে আপনারা এ দেশের জনগনকে অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবেন? কবে আপনারা এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাধ উপলব্ধি করতে দিবেন? কবে আপনারা এ দেশে সত্যিকারের গনতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করবেন? কবে?

আমার মনে হয়, বিএনপির যেসব নেতারা নতুন করে আবার দেশে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করতে চাচ্ছেন, তারা মোটেও প্রজ্ঞার পরিচয় দিচ্ছেন না। সম্ভবত: বর্তমান অবস্থায় দেশের অনেক আসনে জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় ঐ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কিছু নেতা তাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য বিএনপির সাইনবোর্ড ব্যবহার করছে এবং একই সাথে বিএনপিকে বিপথে পরিচালিত করছে। দিনশেষে ঐসব নেতাদের এমন উদ্ভট কর্মকান্ড বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, পতিত ফ্যা'সি'স্ট হাসিনাকেই শক্তিশালী করবে এবং ফ্যা'সি'বা'দী শাসন ব্যবস্থা (আল্লাহ না করুন) আবার ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। 

বিএনপি-জামায়াতের মতো বৃহৎ দু'টি দলের মাঝে কোনো অনৈক্য দেশবাসী আশা করে না। দেশের প্রয়োজনে এবং আমজনতার স্বপ্ন পূরণে বিএনপি জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ- আপনারা প্লিজ ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থেকে বাংলাদেশ থেকে ফ্যা'সিবা'দ মুজিববাদকে চিরতরে নি'র্মূ'ল করুন। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধ এক সোনার বাংলা গড়ে তুলুন- এটাই জাতির প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়