আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর): যশোরের বেনাপোল সীমান্তে জাহাঙ্গীর হোসেন ও শাবুর আলীসহ তিন বাংলাদেশিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের বিরুদ্ধে। এনিয়ে চলতি বছরেই সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হাতে এক বিজিবি সদস্যসহ চার বাংলাদেশি হত্যার শিকার হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে তাদের হাতের শিরা কেটে ও পিটিয়ে হত্যার পর মহদেহ সীমান্তের ইছামতি নদীতে ফেলে দেয় বিএসএফ। পরে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় দুপুরে পুলিশ এদের মধ্যে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করে ।
হত্যার শিকার বাংলাদেশিরা হলেন, বেনাপোল পৌর্টথানার কাগজপুকুর গ্রামের ইউনুচ মোড়লের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন ও দিঘীরপাড় গ্রামের আরিফ হোসেনের ছেলে শাহাবুর হোসেন। এদিকে সীমান্ত হত্যা বন্ধের আশ্বাস দিয়ে এমন জঘন্য হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
যশোরের বেনাপোল সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে হত্যার শিকার তৃতীয় জনের পরিচয় সে সাকিবুল হাসান। সে বেনাপোল পোর্টথানার দিঘির পাড় গ্রামের জামিল ঢালির ছেলে সাকিবুল হাসান। নিহত অন্য দুই জনের সাথে সেও ভারতে যাচ্ছিল একই সীমান্ত পথে।
নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিথর দুটি দেহের সামনে স্বজনদের আহাজারি। এক জনকে নির্যাতনে হত্যার পর হাতের শিরা কেটে ফেলে দেওয়া হয় ইছামতি নদীতে অন্য জনকে পিটিয়ে হত্যার পর বাংলাদেশ সীমান্তে রেখে যায় বিএসএফ। হত্যার শিকার শাহাবুর হোসেন ভারতে যাচ্ছিল কাজের সন্ধ্যানে আর জাহাঙ্গীর যাচ্ছিলেন ভারতে তার স্ত্রীর সাথে দেখা করতে। এসময় বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধরে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। পরিবারের একমাত্র উপার্জন ক্ষম এই মানুষদের হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে দুই পরিবার।
এদিকে সীমান্ত সম্মেলনসহ বিভিন্ন বৈঠকে বিএসএফের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যার বন্ধের আশ্বাস আসলেও তা মানা হয়নি। বার বার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের হত্যা করছে তারা। কর্তব্যরত অবস্থায় এবছরের ২২ জানুয়ারী বিএসএফের হাতে গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্য রহিস উদ্দীনের আজও ন্যায় বিচার মেলেনি।
জাহাঙ্গীরের স্বজন আব্দুর রহিম জানান, বিএসএফ নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করে। তাকে না মেয়ে আইনের হাতে তুলে দিলে একদিন ফিরে আসতো। এ জঘন্য হত্যার বিচার চাইছি।
শাহাবুরের স্ত্রী হাসি বেগম জানান, সে বাড়ি থেকে কাজের কথা বলে বেরিয়েছিল। পরে শুনতে পারি বিএসএফ তাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছে। তার সাথে মানুষ তাকে নদী থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। তার হাত পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাদের কব্জি কেটে দেয় বিএসএফ। এখন আমাদের দেখার আর কেউ থাকলো না। বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ওসি রাসেল মিয়া মিয়া জানান, সীমান্ত থেকে তিন বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের বাড়ি বেনাপোলে। তিন জনেরই শরীরের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কোপানো ও জখমের চিহ্ন রয়েছে।।
আপনার মতামত লিখুন :