এএফএম মমতাজুর রহমান, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : চালক সংকটের কারণ দেখিয়ে দীর্ঘ ১৫ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি পার্বতীপুর ইয়ার্ডের তিন নম্বর লাইনে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ট্রেনটি চালু করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন স্থানীয়রা।
উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী ৩২ নম্বর আপ-ডাউনে ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনে ট্রেনটি যাত্রা বিরতীর কারণে সাধারণ মানুষ খুব উপকৃত হতো। উত্তরা মেইল ট্রেনের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের কাঁচামাল,আত্রাই থেকে মাছ ও সান্তাহারের বিখ্যাত মাদুরসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বহন করা হতো। এতে ব্যায় কম হওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হতো সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
জানা গেছে,এই ট্রেনে ৫টি যাত্রীবাহী কোচ ও একটি লাগেজ ভ্যান ছিল। এছাড়া ছোট-বড় সব স্টেশনে থামে এই ট্রেনটি। ফলে যাত্রীরা এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে অল্প খরচে যাতায়াত করতে পারে। ভোরে পার্বতীপুর থেকে এই ট্রেনটি ছাড়ায় এটি ছিল কর্মজীবী মানুষদের পছন্দের বাহন। এই ট্রেনে বগুড়ার সান্তাহার, নওগাঁর আহসানগঞ্জ, নাটোর, আব্দুলপুর এলাকায় কর্মরত যাত্রীরা বেশি চলাচল করতেন। ট্রেনটি খুব সকালে হওয়ার কারণে অনেকেই রাজশাহীতে চিকিৎসার জন্য আসত উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনে। ট্রেনটি পার্বতীপুর থেকে ছাড়ার পরে জয়পুরহাট পৌঁছানো মাত্র যাত্রীতে ভর্তি হয়ে যেত। ট্রেনটিতে কোচের সিট ক্যাপাসিটির বেশি যাত্রী পরিবহন করা হতো।
এ বিষয়ে সান্তাহারের মাছ ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন যাবত উত্তরাঞ্চলে মাছের ব্যবসা করে আসছি। উত্তরা এক্সপ্রেস টেনে সকালে আত্রাই গিয়ে মাছ ক্রয় করে সান্তাহার এলাকায় বিক্রি করি। কিন্তু ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়েছে।
সান্তাহার রেল স্টেশনের কুলির সরদার আলম সরদার বলেন, সান্তাহার এলাকার শত শত মানুষ উত্তরে ব্যবসা করে এক মাত্র উত্তরা ট্রেনের উপর নির্ভর ছিল। ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যাওয়া আমাদের পাশাপাশি অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা বন্ধ করে বসে আছেন।
সান্তাহার স্টেশন মাস্টার খাতিজা খাতুন বলেন, চালক সংকটের কারণে উত্তরা মেইল ট্রেনটি গত ২৮ জুলাই থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়। ট্রেনটি বন্ধ হওয়ায় এলাকাবাসী চড়ম দুর্ভোগে পড়েছেন। ট্রেনেটি কবে আবার চালু হবে তার কোন খবর পাইনি। তবে শুনছি যে, ট্রেনটি বেসরকারি পর্যায়ে চালু হবে আবার।
বাংলাদেশ রেলওয়ে, রাজশাহী, মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার মুঠোফনে জানান, বিশেষ একটা পরিস্থিতিতে ট্রেনটি বন্ধ করা হয়েছিল। উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আগামী মাসের মধ্যে চালু করতে পারবো বলে আশা করছি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল (রাজশাহী)’র চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট
মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ ভুঁঞা বলেন, উত্তরা ট্রেনটি চালক সংকটের কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে। ট্রেনটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কবে নাগাদ চালু হবে এ বিষয়ে কোন উত্তর দিতে পারেনি তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :