শিরোনাম
◈ শেখ হাসিনাকে ফেরাতে এখনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন আসেনি ◈ মধ্যরাতে উত্তাল ঢাকা কলেজ, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান গ্রেফতার ◈ হরিণ শিকারের কারণেই বিষ্ণোই হয়ে উঠেছেন সালমান খানের প্রধান শত্রু ◈ বিএনপির নীতিনির্ধারকরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত (ভিডিও) ◈ বেনাপোলে জোড়া খুনে ৪ ভাইসহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন ◈ শেখ হাসিনা আর রাজনীতি করার জন্য দেশে ফিরতে পারবে না: উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ◈ ‘ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয় নাই, ভোটের কোনো নিশানা কিন্তু দেখি না’ (ভিডিও) ◈ ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ সম্ভাব্য যেসব উপকূলে আঘাত হানতে পারে ◈ বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর, ২০২৪, ০৬:২৯ বিকাল
আপডেট : ১৯ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাঁশখালীর সাবেক এমপি সহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কল্যান বড়ুয়া, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রা‌মের বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং দু,বা‌রের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় একটি মামলা হয়েছে। সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে মো. বেলাল উদ্দিন নামেএক ব্যাক্তি বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তিনি দৈনিক সময়ের আলো ও একুশে পত্রিকার বাঁশখালী প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত । 

মামলায় সাবেক এম‌পি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালীব সাদলী (৪৬), চাম্বল ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী (৫২), বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র তোফায়েল বিন হোছাইন (৪৮),, শীলকূপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কায়েস সরওয়ার সুমন (৪৩), ছনুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশীদসহ ৬৭ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। মামলায় ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৬টি মামলায় আসামি করা হয় সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন পটিয়া সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের বাংলা বিভাগের ছাত্র। গত ৪ আগস্ট  বাঁশথালীর শেখেরখীল রাস্তার মাথা এলাকায় নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্রজনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

অ‌ভি‌যো‌গে উ‌ল্লেখ করা হয় গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বেলাল উদ্দিনসহ শতশত ছাত্র জনতা শেখেরখীল রাস্তার মাথার মোড়ে দুপুর ২ টার সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে অবস্থান নেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনরত অবস্থায় সেদিন আনুমানিক দুপুর ২টার সময় জ্ঞাত অজ্ঞাতনামা আরও ৫০/৬০ জন আসামী চাম্বল বাজারের দক্ষিণ পাশে জেনারেল হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে হাতে বাঁশ, কাঠের লাঠি, ইট, পাথর, লোহার রড ও আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলোপাতাড়িভাবে গুলি বর্ষণ করতে থাকে। 

আসামীগণের গুলি বর্ষণের আওয়াজ পেয়ে আমরা আতংকিত হয়ে জীবন রক্ষার্থে শেখেরখীল রাস্তার মাথার দক্ষিণে যাত্রা শুরু করলে চেয়ারম্যান ঘাটার সামনে পূর্ব থেকে অবস্থান নেওয়া অন্যান্য আসামীরা হাতে বিদেশী অস্ত্র সহ নিরস্ত্র ছাত্রজনতার উপর ইট পাটকেল ও অবিরত গুলি বর্ষণ করতে থাকে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। দুইদিক থেকে আসামীগণ অতর্কিত আক্রমণ করে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলরত শতশত ছাত্র জনতাকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি সোটা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বেধড়ক মারধর করে মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। 

আসামীগণের নিক্ষেপকৃত ইট পাটকেল, ককটেল ও অনবরত গুলি বর্ষণের ফলে অসংখ্য ছাত্র-জনতার চোখ-মুখ, হাত-পায়ে গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে। আসামীগণের দ্বিমুখী আক্রমণের ফলে নিরহ ও নিরস্ত্র ছাত্র জনতা জীবন রক্ষার্থে শেখেরখীল, রাস্তার মাথার মোড়ে পশ্চিম দিকে যাওয়ার সময় বায়তুশ শরফ মসজিদের সামনে রাস্তার উপর পৌঁছলে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামীগণের ছোটা ছররা গুলি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ভুক্তভোগী শাকের উল্লাহ  (২৫) গুরুতর জখম হয়। শাকের উল্লাহ শেখেরখীল ৪নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ ইসলামের  ছেলে। ছররা গুলির আঘাতে ভুক্তভোগী শাকের উল্লাহ মাটিতে পড়ে গেলে আসামীরা লাঠি সোটা ও লোহার রড নিয়ে ভুক্তভোগীকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেধড়ক মারধর করে। আসামীগণের অমানসিক নির্যাতনে শাকের উল্লাহ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আসামীরা ভিকটিমকে মৃত ভেবে চলে যায়।

এ বিষয়ে  মামলার বাদী বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ভাঙ্গারি মাল ব্যবসায়ী শাকের উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। সে বর্তমানে ক্রেচে ভর দিয়ে চলাফেরা করে। আইনের আশ্রয় নেওয়ারও সামর্থ্য নেই তার। তাই শাকের উল্লাহ ও তার স্বজনদের অনুমতি নিয়ে আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি। আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশী।’

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি সহ প্রত্যক্ষদর্শীরা শাকের উল্লাহকে উদ্ধার করে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসা করে গুলিবিদ্ধ ছররা গুলি বের করি এবং এখনো ছররা গুলি তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যমান আছে।
বাঁশখালী থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ  (ওসি) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী শাকের উল্লাহর পক্ষ থেকে বেলাল না‌মে এক ব‌্যক্তি মামলা দায়ের করেছে ব‌লে তি‌নি জানান।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট বাঁশখালী সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদের আদালতে বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান চৌধুরী ও সরল ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জাফর আহমদ আহমদ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। এর আগে সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও ৫ চেয়ারম্যান, এমপি কন্যা সহ দলীয় শতাধিক নেকাকর্মীর বিরুদ্ধে ৪ জুলাই শফকত চাটগামী ও কালীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল হক বাদী হয়ে অপর দুটি মামলা করেছিলেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর বাঁশখালী সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক আবদুল হামিদের আদালতে মামলাটি করেন সরল ইউনিয়নের জালিয়াঘাটা গ্রামের আমিনুল ইসলাম চৌধুরী।আজ‌কের মামলা সহ সব মিলে সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৬টি মামলা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়