স্বপন দেব, জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতীয় সীমান্তে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। ফেলানীর কথা এখনো মানুষ ভুলেনি। কিন্তু সেই সময়ের সরকার কোনো প্রতিবাদ করেনি। শেখ হাসিনা তার মাথা ভারতের দিকে সিজদা করে নতজানু করে রাখতো। সার্বভৌমত্বের পক্ষে মাথা তুলতো না। এখনতো হাসিনা নেই, জনগণের সরকার ক্ষমতায়। তবে কেন সীমান্তে স্বর্ণা দাসদের নির্মম ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়? অন্তর্বর্তি সরকার কোনো প্রতিবাদ করেনি কেন সেটা জনগণের প্রশ্ন।’ একথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র প্রধান উপদেষ্টা রুহুল কবির রিজভী।
তিনি রবিবার (৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার অধিবাসী ভারতীয় বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত কিশোরী স্বর্ণা দাসের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসে খাগটেকা বাজারে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে হিন্দু কেহ আহত বা নিহত হলে সাথে সাথে আওয়ামী লীগ ও প্রতিবেশী দেশ হিন্দুর উপর আক্রমণ বলে প্রচার করে। কিন্তু ভারত সীমান্তে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান বিবেচনা করে না। তারা সীমান্তে যে কাউকে হত্যা করে। তাদের টার্গেট বাংলাদেশী মানুষ। ওরা ফেলানীকে যেভাবে ঝুলিয়েছে, সেভাবে স্বর্ণাকেও মেরেছে। আরো একজন হিন্দু ছেলেকে মেরেছে। সীমান্তকে শান্তিপূর্ন করার আহবান জানালেও ভারত শুনেনি। হাসিনার পতনের পর ভারত আরো আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। সীমান্ত রক্তাক্ত করছে, সহিংস হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের বিপ্লবের পর ড. ইউনুছের সরকার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের উপরে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। কিন্তু সীমান্তে হত্যার বিষয়ে আপনারা নির্লিপ্ত কেন? উদাসিন কেন? কিশোরীকে হত্যার বিষয়ে কোনো কথা নেই কেন? এ প্রশ্ন দেশের মানুষের মুখে মুখে।’
দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচন দেয়ার দাবী জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘লুটপাটের সরকারের দোসরদের বিভিন্ন ভাবে প্রতিষ্টিত করছেন। ওরা আপনাদের সফল হতে দেবে না। ওরা নানা চক্রান্ত করে যাচ্ছে। সরকার ব্যর্থ হলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে বার বার দেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু পারেনি। মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেলে রাখা হয়েছে। কিন্তু তিনি মাথা নত করেননি। সভা শেষে তিনি বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত কিশোরী স্বর্ণা দাসের পরিবারকে সান্তনা দেন।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ কর্তৃক আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শরিফুল হক সাজু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন- সংগঠনের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আলমগীর কবির, আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন- মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন মিঠু। সভায় সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপি দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :