শিরোনাম
◈ পেনাল্টি ছাড়া রোনালদো থেকে মেসির গোল বেশি ◈ ইমার্জিং এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে হেরে গোলো বাংলাদেশ ◈ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে নারী বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন  ◈ পিসিবির নতুন প্রস্তাব, ভারত নিজ দেশ থেকে আসা-যাওয়া করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি  খেলতে পারবে ◈ শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার আগে যা বলতে চেয়েছিলেন ◈ বাংলাদেশ থেকে রফতানি কমেছে, ভারত থেকে আমদানি কমেনি ◈ রাজু ভাস্কর্যে নারী প্রতিকৃতির মাথায় ‘হিজাব’, সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন ◈ শেখ হাসিনাকে ফেরাতে এখনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন আসেনি ◈ মধ্যরাতে উত্তাল ঢাকা কলেজ, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান গ্রেফতার

প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:৫২ দুপুর
আপডেট : ২১ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,  ৫ জনের মৃত্যু

 

ডেস্ক রিপোর্ট : টানা প্রবল বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ’৮৮-এর বন্যার চেয়েও এবার ভয়াবহ বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।  রোববার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় বন্যার্তরা দুর্ভোগে পড়েছেন। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং চেল্লাখালী নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ১৮৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

উজানের ঢলের পানি নেমে আসা অব্যাহত থাকায় শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এখনো শেরপুরের ৫ উপজেলার কমপক্ষে শতাধিক গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ তলিয়ে রয়েছে। অসংখ্য বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে মাছের খামার থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ায় খামারিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। 


গত শুক্রবার রাতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বের হয়ে বন্যার পানিতে নিখোঁজ হওয়া নালিতাবাড়ী উপজেলার অভয়নগর গ্রামের বাছির উদ্দিনের দুই ছেলে আবু হাতেম (৩০) ও আলমগীরের (১৭) লাশ শনিবার ওই এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বাতকুচি গ্রামের আব্দুল হাকিমের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৪৫)। এ ছাড়া ঝিনাইগাতীর সন্ধ্যাকুড়া এলাকায় বন্যার পানিতে ভেসে এসেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অজ্ঞাত এক নারীর গলিত লাশ। 

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, এবারের বন্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অনেকেই বলেছেন— ’৮৮-এর বন্যার চেয়েও এবার ভয়াবহ। মাছের খামারিরা বলছেন, তাদের খামারের মাছ ভেসে যাওয়ায় তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। অনেক স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল তোড়ে ভেঙে গেছে ঘরবাড়ি, গাছপালা। পানি উঠায় অনেকের বাড়িতে চুলা জ্বলছে না। তাই রান্নাবান্না-খাওয়াদাওয়া বন্ধ রয়েছে। বন্যাকবলিত পরিবারগুলোতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বাড়িঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকে নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন। পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে শেরপুর থেকে তিনআনী হয়ে নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগাঁও সেতুর কাছে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় শনিবার দুপুর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া শেরপুর থেকে গাজীর খামার হয়ে নালিতাবাড়ীগামী রাস্তার কলসপাড় ইউনিয়নের ৪টি স্থানের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ওই সড়কে যানবাহন ও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ ছাড়া নালিতাবাড়ী-নাকুগাঁও স্থলবন্দর সড়কসহ জেলার অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১০টি সড়কের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। 

শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যায় জেলায় ৭ হাজার ৬৯৬ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান সম্পূর্ণ নিমজ্জিত, ৯ হাজার ৬৯৩ হেক্টর জমির রোপা আমন আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়া ২০৮ হেক্টর জমির সবজির সম্পূর্ণ এবং ৪১৩ হেক্টর আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যায় ৬৫ হাজার ৪০০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 

জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান রোববার সকালে বলেন, শনিবার রাতে ভারি বৃষ্টি হয়নি। তবে রোববার সকাল থেকে আবার বৃষ্টি হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য এবং উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ করছেন।  বন্যার্তদের সহায়তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা পুরোদমে চলছে। তা ছাড়া ১৭টি মেডিকেল টিম বানভাসি মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য এলাকায় কাজ করছে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে বন্যার্তদের চিকিৎসা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সুত্র : যুগান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়