শিরোনাম
◈ প্রবাসী সরকার গঠন নিয়ে রাজনীতিতে নতুন আলোচনা ◈ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন সমন্বয়ক হাসনাত ◈ জীবন দিতে প্রস্তুত আছি, ফ্যাসিস্টদের উত্থান সহ্য করা হবে না: বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সারজিস ◈ ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি ◈ আজারবাইজানকে "ভাল বন্ধু" হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ এখনো ১০১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ, ইনিংস পরাজয় এড়াতে লড়ছে শান্তরা ◈ কোটি টাকার স্পন্সর পেলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ◈ এ সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম (ভিডিও) ◈ সুখবর: প্রাথমিকে ৯৫৭২ সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি, আছে শর্ত ◈ পদত্যাগ করা সমন্বয়কদের নতুন সংগঠনের নাম ঘোষণা, বললেন আবারও রক্ত ঝরাতে প্রস্তুত

প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:২৬ বিকাল
আপডেট : ১৯ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নানা অনিয়ম আর সিন্ডিকেটের তীর্থ ভূমি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড

শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা : নানা অনিয়মের ভেতরে বছরের পর বছর দেশের অন্যতম প্রাচীন কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে প্রেষণে কর্মরত এক ডজনের বেশী কর্মকর্তা বিগত সরকারের লোকদের ম্যানেজ করে গত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মকর্তা কাঙ্খিত পদোন্নতি না পাওয়ায় তাদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের একাধিক দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। ৬টি জেলা নিয়ে গঠিত এই বোর্ডের অধীনে স্কুল কলেজ মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেখানে প্রতিবছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর বাইরে স্কুল-কলেজের অনুমোদন, পাঠদান, একাডেমিক স্বীকৃতি,স্বীকৃতি নবায়ন,পরীক্ষার অনুমতি,খাতা পরীক্ষণ ও নিরীক্ষণ, কম্পিউটারের মাধ্যমে এসএসসি ও এইচএসসি’র ফলাফল তৈরী করা বোর্ডটির অন্যতম প্রধান কাজ।

নিয়ম রয়েছে,বিভিন্ন সরকারী কলেজ থেকে অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষকরা প্রেষণে শিক্ষা বোর্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। জনশ্রæতি আছে, যেখানে কলেজগুলোতে শুধু পাঠদান কার্যক্রমে অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপকদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিল,সেখানে প্রেষণে শিক্ষা বোর্ডে বদলী হয়ে এসে বিশাল কর্ম পরিধির মাঝে অনেকেই নীতি নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেন। এজন্য,দেখা যায় তিন বছরের বেশী প্রেষণে থাকার নিয়ম না থাকলেও অজ্ঞাত কারণে কুমিল্লা বোর্ডের এক ডজনেরও বেশী কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে ঘুরে ফিরে বোর্ডের দায়িত্বশীল পদগুলো দখল করে আছেন। এর ফলে সরাসরি শিক্ষা বোর্ডে যোগদান করা কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্খিত পদোন্নতি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদোন্নতি বঞ্চিত একাধিক সুত্র জানায়, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার আগে পরে মার্কশীট,সনদ যাচাই-বাছাই এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ,পরীক্ষা সম্পন্ন ও ফলাফল প্রকাশ ইত্যাদি খাত দেখিয়ে এসব কর্মকর্তারা একাধিকবার মুল বেতনের সমপরিমান অর্থ গ্রহণ করে বোর্ড থেকে। এর বাইরে বোর্ডের কম্পিউটার যন্ত্রাংশ মেরামত, দরপত্রে উল্লেখিত এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার খাতার পরিবর্তে ঠিকাদারের যোগসাজশে নি¤œমানের খাতা গ্রহণ ও পরীক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহ,পুরাতন
খাতা-কাগজ বিক্রয় ,খাম,বার্ষিক ক্যালেন্ডার,ডায়রী,বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনের নামে লাখ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো,অর্থ বছর শেষে অডিট টিমকে ম্যানেজের নামে লাখ লাখ টাকা আতœসাৎ’এ জড়িয়ে পরার অভিযোগ উঠেছে প্রেষণে কর্মরত অনেকের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে প্রেষনের কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন একই স্থানে অবস্থান ও স্থানীয় হওয়ায় বছরের পর বছর উল্লেখিত অনিয়মগুলো নির্বিঘ্নে করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে একটি জনশ্রুতি আছে যে, বর্তমানে একযুগেরও বেশী সময় ধরে প্রেষণে কর্মরত সকলেই বারৈই ও রতন সিন্ডিকেট সমস্য। এর মধ্যে মন মত রঞ্জন বারৈই সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এপিএস এবং রতন কুমার মজুমদার সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনির ঘনিষ্ট ও চাঁদপুর পুরান বাজার কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ। বিগত সময় থেকে তাদের নিয়মিত চাঁদা দিয়ে কুমিল্লা বোর্ডের প্রেষণে থাকা কর্মকর্তারা এই প্রতিষ্ঠানটিতে বহাল তবিয়তে
কর্মরত আছেন।

বোর্ডে প্রেষণে থাকা কর্মকর্তারা হলেন- সচিব,প্রফেসর নুর মোহাম্মদ ( যোগদান- ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি), পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড.আসাদুজ্জামান (যোগদান ২০১৮ সালে), উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. সফিকুল ইসলাম ( যোগদান ২০১৮ সালে), উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মোঃ সহিদুল ইসলাম (২০১৬

সালের ৬ মার্চ), উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ( উচ্চ মাধ্যমিক)হাবিবুর রহমান (২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল), উপ- পরিচালক হিসাব ও নিরিক্ষা কর্মকর্তা সানাউল্লাহ ( যোগদান- ২০১৬ সালে), উপ-সচিব প্রশাসন কর্মকর্তা একেএম সাহাবুদ্দিন ( ২০১৮ সালে), উপ-সচিব (একাডেমী) সাফায়েত মিয়া ( যোগদান- ২০১৮ সালে) , বিদ্যালয় উপ-পরিদর্শক কামরুজ্জামান (২০১০ সালের ৯ নভেম্বর যোগদান), উপ-কলেজ পরিদর্শক বিজন চক্রবর্তী(২০১০ সালের ৭ অক্টোবর), উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক জাহিদুল হক(২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে যোগদান), কলেজ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী ( যোগদান-২০১৮ সালে) এবং হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম হোসেন ( যোগদান ২০১৯ সালে)।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. নিজামুল করিম জানান, একই প্রতিষ্ঠানে প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের তিন বছরের বেশী থাকার নিয়ম নেই, এমন একটা নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা প্রতিফলিত হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যতদিন না বদলি করে ততদিন থাকতে পারে। আর প্রেষণে থাকা কর্মকর্তারা কোন দুর্নীতির সাথে জড়িত নয়। অনেক সময় যে অভিযোগগুলো তাদের বিরুদ্ধে উঠে তা সঠিক নয়। এখানে আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব রয়েছে। এখানে দুর্নীতির কোন স্থান নেই। আর
এখানে কারো কোন সিন্ডিকেট নেই। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়