শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০১:৫৩ রাত
আপডেট : ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অক্টোবরে ৩২৯ কোটির  বেনাপোল বন্দর কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল  উদ্বোধন

বেনাপোল(যশোর) প্রতিনিধি: দেশের বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে পণ্যজট কমাতে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ৩২৯ কোটি টাকার  ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনালটি আগামী মাসেই (অক্টোবর) চালু হবে বলে জানিয়েছেন স্থল বন্দরের প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী হাসান আলী। 

এদিকে এটি চালু হলে একসঙ্গে এই টার্মিনালে রাখা যাবে ১২ থেকে ১৫শ’ পণ্যবাহী ট্রাক। এরফলে কমে যাবে ভোগান্তি। বড় ভুমিকা রাখবে বানিজ্য সম্প্রসারনে।

এর আগে চলতি বছরের জুনে টার্মিনালটি উদ্বোধনের কথা থাকলেও বিএসএফের বাঁধার মুখে এক মাসের ও বেশি সময় ধরে নির্মান কাজ বন্ধ ছিল।এতে উদ্বোধন পিছিয়ে যায়। পরে বন্দরের প্রচেষ্টায় আবার কাজ শুরু হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও বন্দর সূত্রে থেকে জানা যায়, প্রায় ২৪ একর জমির উপরে ৩শত ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এই কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি। এরমধ্যে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১০৯ কোটি এবং নির্মাণ কাজ বাবদ ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।

সড়ক ও রেল যোগাযোগ সহজ হওয়ায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সাথে বাণিজ্য বেড়েছে বহুগুণ। তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ে পণ্য পরিবহনে ভোগান্তি । এই সংকট থেকে উত্তরণে এবং স্থলবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেনাপোলে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণ- শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক(ট্রাফিক)  রাশেদুল সজীব নাজির  বলেন,জমি অধিগ্রহণপূর্বক এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়। এ প্রকল্পের মোট নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৩২৯ কোটি টাকা। 

তিনি আরো বলেন,এ টার্মিনালে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ ট্রাক ধারণক্ষমতা  রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় পার্কিং ইয়ার্ড, কার্গো ভবন, বন্দর সেবা ভবন, ইউটিলিটি ভবন,ফায়ার স্টেশন, আধুনিক টয়লেট কমপ্লেক্স, ওয়েব্রিজ স্কেলসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। টার্মিনালটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন। বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেই টার্মিনালটি চালু করা সম্ভব। এটি চালু হলে বন্দরের দীর্ঘ দিনের যানজট হ্রাস পাবে এবং বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।বেনাপোল স্থলবন্দর কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল প্রকল্পে কাজ করে চারটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হচ্ছে টিবিইএএল। তারা নির্মাণ করে বাউন্ডারি ওয়াল (প্রাচীর) ও গেট। এনডিইএল আরএসএসআইজেভি- এরা টয়লেট, ব্যারাক বিল্ডিং, ওপেন ইয়ার্ড ও অপারেশন বিল্ডিং ইত্যাদি কাজ করেছে। এরপর এটিটিএল প্রতিষ্ঠানটি করেছে স্ক্যানারের (কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক) কাজ এবং আরেক প্রতিষ্ঠান এসটি টেকনোলজি লিমিটেড করেছে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের বেনাপোল বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মেঃ মেহেরুল্লাহ বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানির চাহিদা বাড়ছে। এতে যানজট  বাড়ছে।  আধুনিক মানের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি চালু হলে  পণ্যজট কমবে এবং বানিজ্য সহজ হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুর রহমান জানান, প্রতিদিন ভারত থেকে প্রায় ৫ শতাধিক  ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। কিন্তু বন্দরে পণ্যগারে জায়গা সংকটে অনেক পণ্য রাখা হয় খোলা আকাশের নিচে। এছাড়া ভারতীয় ট্রাকগুলো পণ্য নিয়ে দিনের পর দিন বসে থাকে বন্দরে। জায়গা না থাকায় আনলোড করতে সমস্যা হয়। টার্মিনাল চালু হলে এ সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে বলে মনে করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

স্থল বন্দরের প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি নির্মাণে সর্বোচ্চ গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়েছে বুয়েট, কুয়েট এবং আমাদের নিজস্ব ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে।  এটি চালু হলে এ পথে দুই দেশের মধ্যে বানিজ্য সম্প্রসারনে বড় ভুমিকা রাখবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে  টার্মিনালে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আর পরবর্তী মাস অর্থাৎ অক্টোবরেই টার্মিনালটি উদ্বোধন হবে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, টার্মিনাল চালু হলে বন্দরের সক্ষমতা ও রাজস্ব আয় দুটোই বাড়বে। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য আরও সহজ করবে।।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়