শিরোনাম
◈ ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি ◈ আজারবাইজানকে "ভাল বন্ধু" হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ এখনো ১০১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ, ইনিংস পরাজয় এড়াতে লড়ছে শান্তরা ◈ কোটি টাকার স্পন্সর পেলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ◈ এ সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম (ভিডিও) ◈ সুখবর: প্রাথমিকে ৯৫৭২ সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি, আছে শর্ত ◈ পদত্যাগ করা সমন্বয়কদের নতুন সংগঠনের নাম ঘোষণা, বললেন আবারও রক্ত ঝরাতে প্রস্তুত ◈ ব্যয় কমাতে কমনওয়েলথ গেমস থেকে বাদ পড়লো ক্রিকেট ◈ আরেক দফা বাড়ছে নীতি সুদহার, বাড়বে সব ধরনের সুদ ◈ লন্ডনে আলিশান বাড়িতেই আছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান, আমিরাতে আরও ৩০০ বাড়ির সন্ধান (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০২:৫৮ দুপুর
আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাবিতে দরপত্র ছাড়াই ছয় লাখ টাকার আসবাবপত্র ক্রয়

চৌধুরী হারুনুর রশীদ, রাঙামাটি : রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) শীর্ষ দুই কর্মকর্তার পদত্যাগের পর নিয়মবহির্ভূতভাবে চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মানুযায়ী টেন্ডার প্রক্রিয়া বা দরপত্র আহবান করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আসবাবপত্র সরবরাহের কথা থাকলেও তার কিছুই অনুসরণ করা হয়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিষ্ট্রার, প্রক্টরসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় তড়িঘড়ি করে এই
আসবাবপত্র কেনা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল গফুর বলেন, ‘আমাদের তৎকালীন ভিসি মহোদয় দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে বি. আলম ট্রেডার্সের লোকজনদের ডেকে কাস্টমাইজড আসবাবপত্রের
অর্ডার দিয়েছেন। এই আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য বরাদ্দও আনা হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে তিনি পদত্যাগ করেছেন;
যে কারণে তিনি দায়িত্বে না থাকলেও অর্ডার করা আসবাবপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। ভিসি মহোদয় তো আর এসব আসবাবপত্র বাসায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই, এগুলা বিশ্ববিদ্যালয়েই থাকবে। আর আপনাকে এখানকার যারা এসব বিষয় বুঝিয়েছে;আপনি তাদেরকেসহ আমার অফিসে আসবেন। আপনাদেরকে বিষয়টি আমি আরও ভালোভাবে বুঝিয়ে দেব।’

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,আবদুল গফুর ছিলেন মহালছড়ি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগ শাসন আমলে তিনি লবিং করে রাঙামাটি বিজ্ঞানও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদ বাগিয়ে। তিনি অত্যান্ত কৌশলী এই কারনে নানান ধরনের প্রকল্প
গ্রহনের অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে, গত ৫ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাঙামাটি জেলা শহরের বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত রিজার্ভবাজারে অবস্থিত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স বি.আলম ট্রেডার্স’ বিশ^বিদ্যালয়ে আসবাবপত্র সরবরাহ করে। সরবারহকৃত আসবাবপত্রের মধ্যে রয়েছে এক্সিকিউটিভ টেবিল, এক্সিকিউটিভ চেয়ার ও ফাইল ক্যাবিনেট। এরমধ্যে দুইটি মডেলের পাঁচটি এক্সিকিউটিভ টেবিল (কাস্টমাইজড), আটটি এক্সিকিউটিভ চেয়ার ও ১১টি ফাইল ক্যাবিনেট
রয়েছে। মেসার্স বি. আলম ট্রেডার্সের দেওয়া ডেলিভারি চালানের কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

বি.আলম ট্রেডার্সের সরবরাহকৃত রিগ্যাল ফার্নিচার ব্র্যান্ডের মোট ২৪টি আসবাবপত্রের আনুমানিক বাজার মূল্য যাচাই করে দেখা গেছে ভ্যাট-ট্যাক্স ছাড়াই ৬ লাখ ২৮০ টাকা। নির্দিষ্ট মডেলের বাজারমূল্য অনুযায়ী আরএফএলের রিগ্যাল ফার্নিচার ব্র্যান্ডের চারটি টেবিলের প্রতিটি টেবিলের মূল্য ৪৮ হাজার ৭৫০ টাকা, অন্য আরেকটি মডেলের মূল্য ৫০ হাজার ৬০০ টাকা, চেয়ার ১৪ হাজার ২৫০ টাকা এবং প্রতিটি ফাইল ক্যাবিনেটের মূল্য ২১ হাজার ৮৮০ টাকা। দরপত্র আহবান ছাড়া আসবাবপত্র করায় এটি
মোট কত টাকার প্রকল্প হতে পারে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 


রাঙামাটি শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজক চাকমা জানান,কোন প্রকার টেন্ডার ব্যতীত ৬ লক্ষ টাকার আসবাবপত্র ক্রয় করতে পারে না। প্রকিউরমেন্ট অফিসার কে অবগত করে আগে নোটিশ প্রকাশ করতে হবে ।

এদিকে,গত ১৮ আগস্ট রাবিপ্রবির উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড.সেলিনা আখতার ও উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) প্রফেসর ড.কাঞ্চন চাকমার পদত্যাগ করেন। এর আগে বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার, প্রক্টরসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা পদত্যাগের পর রাবিপ্রবি কার্যত প্রশাসন শূন্য রয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমও। এরমধ্যেই ‘নিয়মবহির্ভূত’ভাবে ক্রয় করা হয়েছে চেয়ার- টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) ক্রয় কর্মকর্তা (প্রকিউরমেন্ট অফিসার) বিভাস চাকমা বলেন, ‘৫ সেপ্টেম্বর কিছু আসবাবপত্র বিশ^বিদ্যালয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু এই মালামাল কারা এনেছে কিংবা কিভাবে এনেছে এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রসিউরমেন্ট ডিপার্টমেন্টকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। তবে জেনেছি আগের ভিসি
ম্যাডাম থাকতে তিনি মৌখিকভাবে বি.আলমকে অর্ডার দিয়েছেন।’

আসবাবপত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বি. আলম ট্রেডার্সের ম্যানেজার মো.শরীফ বলেন, ‘রাবিপ্রবিতে কত টাকার মালামাল গিয়েছে এটা আমি সঠিক জানি না। আমি তো দোকানে বসি, অফিস ডিলগুলো আমাদের সিনিয়র ম্যানেজার জয়নাল ভাই দেখেন।’ যদিও পরে এ বিষয়টি জানতে বি. আলম ট্রেডার্সের সিনিয়র ম্যানেজার জয়নাল আবেদীনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে, সদ্যপদত্যাগ করা রাবিপ্রবির প্রো-ভিসি ড.কাঞ্চন চাকমা বলেন, ‘দরপত্র আহŸান হয়েছে কিনা এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। এটা তৎকালীন ভিসি, পরিকল্পনা বিভাগের গফুর সাহেব জানতে পারবেন। আমাকে টেন্ডার কমিটিতেও রাখা হয়নি।’ রাবিপ্রবির দরপত্র কমিটির সদস্য ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর রাঙামাটি অফিসের সহকারী প্রকৌশলী আলো জ্যোতি চাকমা বলেন, ‘জুলাই ও আগস্টে আসবাবপত্র ক্রয় সংক্রান্ত কোনো দরপত্র আহŸান করা হয়নি। দরপত্র আহŸান করা হলে তো কমিটির সদস্য হিসেবে আমাকে জানানোর কথা। আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়