ফরহাদ হোসেন, ভোলা : কয়েক মাস আগেও যেসব জমি ছিলো অনাবাদি, এখন সে জমিতে শোভা পাচ্ছে বস্তা ভর্তি আদা গাছে। বস্তার মধ্যে দিন দিন পরিপূর্ণ হচ্ছে আদা। আর মাত্র চার মাস পরেই এসব আদা বস্তা থেকে তুলে বিক্রি করবেন। বর্তমানে প্রতিদিন কাজের ফাঁকে আদা গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
জানা গেছে, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৮ জন কৃষক প্রায় ১২শত বস্তায় এ বছর নিজেদের অনাবাদি জমিতে আদা চাষ করেছেন। আদা তোলা পর্যন্ত প্রতি বস্তায় চাষিদের খরচ হবে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। বস্তা প্রতি সর্বনিম্ন ১ কেজি আদা পাবে চাষিরা। বাজারে এসব আদা প্রতি কেজি দুই থেকে আড়াইশত টাকা করে বিক্রি করতে পারবেন তারা। আদার জাতগুলো হচ্ছে- বারি আদা-২ এবং পাহাড়ি আদা।
আদা চাষী মো. শাহে আলম জানান, গত এপ্রিল মাসে কৃষি অফিসের পরামর্শে কুড়িগ্রাম থেকে বারি আদা-২ জাতের বীজ এনে ২৪৫ বস্তায় করে আদা চাষ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে আদার অবস্থা খুবই ভালো। আগামী মাস চারেকের মধ্যে বস্তার ভেতর থেকে আদা তুলতে পারবো। আদা তোলা পর্যন্ত তার খরচ হবে ১২-১৩ হাজার টাকা। তিনি আশা করছি এই ২৪৫ বস্তা থেকে অন্তত ৬০ হাজার টাকার আদা বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, এই আদা চাষ খুবই সহজ। কোনো শ্রমিকেরও প্রয়োজন হয় না। নিজের অন্যান্য কাজের ফাঁকে নিজেই এসব আদা গাছের পরিচর্যা করতে পারি। আর এই আদা চাষে খরচও অনেক কম। এবার যেহেতু ভালো ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই সামনের বছরও আরো অধিক জায়গায় আদা চাষ করবো।
আবুল কালাম নামে আরেক আদা চাষি জানান, গত বছর সীমিত পরিসরে বস্তায় আদা চাষ করেছি। ওই বছর আদা ভালো হয়েছিল। তাই এ বছর ১৫০ বস্তায় নতুন করে আবারো আদা চাষ করেছি। এবারও মনে হচ্ছে ফলন ভালো হবে। আশা করছি এখান থেকে এ বছর অন্তত ৩০ হাজার টাকার আদা পাবো। বস্তা পদ্ধতির এই আদা চাষে অতিরিক্ত জমির প্রয়োজন হয় না। নিজের বাড়ি বা বাগানের যেকোনো স্থানেই এই আদা চাষ করা যায়। তাই সামনের বছর ১ হাজার বস্তায় আদা চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।
লালমোহন উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা টুটুল চন্দ্র সাহা বলেন, অনাবাদি জমিতেই কৃষকরা বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে পারেন। এতে কৃষকদের খরচ অনেক কম। বস্তা পদ্ধতির এই আদা রোপণের ৮ মাসের মধ্যে পুরোপুরি ফলন চলে আসে। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলায় ১২শত বস্তায় কৃষকরা আদা চাষ করেছেন। আশা করছি আগামীতে অন্তত ২০ হাজার বস্তায় কৃষকরা আদা চাষ করবেন। কারণ এরই মধ্যে অনেকে এই বস্তা পদ্ধতির আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :