আব্দুম মুনিব, কুষ্টিয়া: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘এই বিপ্লব, এই গণঅভ্যুত্থান কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের নয়, বিশেষ দলের নয়, শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের নয়– ছাত্র-ছাত্রীদের নেতৃত্বে আপামর জনতার। এই জন্য অভিনন্দন ১৮ কোটি মানুষের। এই বিপ্লব একদিনে জমে ওঠেনি। এটি ছিল সাড়ে ১৫ বছরের জুলুম, বঞ্চনা, দুর্নীতি-লুটপাট, মানুষের ইজ্জত নিয়ে খেলা, মানুষের জীবন নিয়ে খেলার একটা বিস্ফোরণ।’
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় জামায়াত আমির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীরা জাতিকে বদলানোর জন্য রাস্তায় নামেনি। তারা তাদের একটা ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছিল। তৎকালীন গণবিচ্ছিন্ন প্রধানমন্ত্রী তাদের একটা গালি দিলেন। সেই গালি তাদের রক্তে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনে যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাষ্ট্রের, তা রাষ্ট্রের দুশমনরা করেছে। যারা এই আন্দোলনকে ব্যর্থ করতে চেয়েছিল। এটিকে একটা উচ্ছৃঙ্খল জঙ্গি আন্দোলন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে তারা বিশ্বের বুকে অপমানিত করতে চেয়েছিল। এটি তাদের কাজ, দুর্বৃত্তদের কাজ।
‘আমরা আগেও দাবি জানিয়েছি, এখনও দাবি জানাই জাতিসংঘের সহায়তায় একটা একটা নিউট্রাল থরো ইনকোয়ারি হোক। কারা দুষ্কৃতকারী, কারা অপরাধী বের হয়ে আসুক।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বেদনার সঙ্গেই বলতে হয়, ‘বিগত সরকার ক্ষমতায় এসেছিল ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি। শপথ নিয়েই তারা জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল, পরের মাসের ২৬ এবং ২৭ তারিখে ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে নারকীয় হত্যা সংঘটিত হলো। বিডিআরের মহাপরিচালকসহ ৫৭ জন চৌকস দেশপ্রেমিক অফিসারকে হত্যা করা হলো। মা-বোনকে নির্যাতন করা হলো।’
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘তারা তো আমাদের প্রতিবেশী। আমরা তাদের বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, এখনও চাই। আমার প্রতিবেশী শান্তিতে থাকলে আমিও শান্তিতে থাকবো। আমি আমার প্রতিবেশীকে কষ্ট দিলে আমাকেও কষ্ট পাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে। কেন আমরা সেটি করবো? আমরা তাদের সঙ্গে সমতা, ন্যায্যতা এবং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে একটা বন্ধুসুলভ, প্রতিবেশীসুলভ সহঅবস্থান চাই।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন– দলের কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের কার্যনির্বাহী সদস্য ও পরিচালক মোবারক হোসাইন। টিম সদস্য ড. আলমগীর বিশ্বাস, খন্দকার এ কে এম আলী মহসিন, আব্দুল মতিন, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা জেলা জামায়াতের আমির, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হুসাইন, মুফতি আমির হামজা, কুষ্টিয়া জেলা ও উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নেতারা।