বেনাপোল( যশোর ) প্রতিনিধি : বেনাপোল বন্দরের সড়ক পথে ভারতের সাথে আমদানি,রফতানি বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিক হলেও ভারতের আপত্তির কারণে রেলপথে দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন ও যাত্রী যাতায়াত এখনও বন্ধ রয়েছে। এতে দ্রুত পণ্য পরিবহনে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ায় যেমন শিল্পকলকারখানায় উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে তেমনি নিরাপদ যাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে। কবে রেল পথে বানিজ্য স্বাভাভিক হবে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। রেলে দ্রুত বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিক করতে নতুন সরকারের সহযোগীতা কামনা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
গত ১৯ জুলাই থেকে সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সড়ক পথে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত সংক্ষিপ্ত করে এবং রেল পধে দুই দেশের মধ্যে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে দেয়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেল ও সড়ক পথে ভারতের সাথে আমদানি রফতানি বানিজ্য ও পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। সাম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরাপত্তা জনিত কারণ দেখিয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র সমাজের জয়ের পর নতুন সরকার গঠনে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক হওয়ায় এক সপ্তাহ আগেই সড়ক পথে শুরু হয়েছে বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়ত।
তবে ভারত সরকারের নানান আপত্তির কারনে এখনো রেল পথে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন সেবা বন্ধ রয়েছে। রেলে বানিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত চালু করতে বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ ভারত সরকারের রেল মন্ত্রনালয়কে অনুরোধ জানালেও সাড়া মিলছেনা। এতে জরুরী পণ্য আমদানিতে বাঁধা গ্রস্থ হওয়ায় দেশের শিল্পকলকরখানায় উৎপাদন বিঘ্ন ঘটছে ও যাতায়াতে ভোগান্তি বাড়ছে। রেল পথে আমদানি পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগ রয়েছে শিল্ককলকারখানার কাচামাল,বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল, সার,সিমেন্ট তৈরীর উপকরণ ও কৃষি যন্ত্রাংশ।
বেনাপোল আমদানি,রফতানি সহসমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান,সড়ক পথে যে পরিমান পণ্য আমদানি হতো তার অর্ধেক পরিমান পণ্য রেল পথে আমদানি হতো। কিন্তু রেল পথে বাণিজ্য বন্ধ থাকায় বন্দরে আমদানির পরিমান কমেছে।
পাসপোর্টধারী গৌতম ঘোষ জানান, নিরাপদ যাত্রায় মেডিকেল ভিসার অসুস্থ্য যাত্রীরা রেলে বেশির ভাগ ভারতে যায়। কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে রেল সেবা বন্ধ থাকায় এখন তারা ভোগান্তিতে পড়েছে। দ্রুত রেলপথর যাত্রী সেবার দাবি জানান তিনি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ এ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমাস জানান, রেলে বেশির ভাগ শিল্পকলকারখানার জরুরী কাচামাল ও কৃষি পণ্য আমদানি হয়। কিন্তু রেলে দুই দেশের মধ্যে পন্য পরিবহন বন্ধ থাকায় শিল্ককলকাখানার উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের লোকশানের পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।
রোববার বিকালে বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেল ষ্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান,বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেল রুটে যাত্রী পরিবহন করে বন্ধন এক্সপ্রেস এবং ৩টি কোম্পানী ওয়াগান,পার্সেল ভ্যান ও সাইড ডোর কন্টেইনারের মাধ্যমে আমদানি পণ্য পরিবহন করে আসছে। কিন্তু বৈষম্য বিরোধি ছাত্র আন্দোলনে নিরাপত্তা জনিত কারনে গত ১৯ জুলায় দুই দেশের মধ্যে রেলপথে বাণিজ্য এবং যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ। তবে দেশের অস্থীতিশীল পরিস্থিতি কেটে যাওয়ায় দেশের অভ্যন্তরে রেল সেবা শুরু হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক রুটে সেবা চালুর জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানালেও এখন পর্যন্ত সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা।