শিরোনাম
◈ শেখ হাসিনাকে ফেরাতে এখনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন আসেনি ◈ মধ্যরাতে উত্তাল ঢাকা কলেজ, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান গ্রেফতার ◈ হরিণ শিকারের কারণেই বিষ্ণোই হয়ে উঠেছেন সালমান খানের প্রধান শত্রু ◈ বিএনপির নীতিনির্ধারকরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত (ভিডিও) ◈ বেনাপোলে জোড়া খুনে ৪ ভাইসহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন ◈ শেখ হাসিনা আর রাজনীতি করার জন্য দেশে ফিরতে পারবে না: উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ◈ ‘ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয় নাই, ভোটের কোনো নিশানা কিন্তু দেখি না’ (ভিডিও) ◈ ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ সম্ভাব্য যেসব উপকূলে আঘাত হানতে পারে ◈ বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট, ২০২৪, ০২:৩৭ দুপুর
আপডেট : ১১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বাদ পড়েনি সাংবাদিকরাও

জাকারিয়া জাহিদ, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী): সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গনমাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগের সত্যতা নিশ্চিত করার পরপরই পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাবেক দুই প্রতিমন্ত্রী সহ আওয়ামলীগের অফিস, নেতা-কর্মীর বাড়ী ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, জবর দখল, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া দুই সাংবাদিকের বাসা বাড়ী ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। কলাপাড়া আওয়ামী লীগ অফিস, মহিপুর থানা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগসহ উপজেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক অফিসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।

সোমবার দুপুর থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার দুই পৌর শহর, মৎস্য বন্দর, গ্রামীন হাট বাজারসহ গ্রামীন এলাকায় এ ভাঙচুর, লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। এসময় আ’লীগ নেতা কর্মীদের কুপিয়ে গুরুতর জখম, চোখ নষ্ট করে দেয়ার মত ঘটনা ঘটেছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য কলাপাড়া, পটুয়াখালী, বরিশাল ও ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে। নতুন করে আরও হামলা-ভাঙচুরের আশংকায় বাড়ী ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে অন্তত: শতাধিক নেতা-কর্মী। সমগ্র  উপজেলা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, একাধিক বার যোগাযোগ করেও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে তারা কোন রকম সহায়তা পাননি। আওয়ামী লীগ এ হামলা-ভাঙচুরের জন্য বিএনপিকে দায়ী করলেও স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছেন হামলাকারীরা কেউ তাদের দলের নয়। দলের দীর্ঘ বছরের দুর্দিনে তাদের কখনও দেখা যায়নি।

সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর পাওয়ার পর পরই কলাপাড়া পৌরশহরে সদ্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের বাসভবন, মার্কেট, বরফ কলে হামলা ভাঙচুর করা হয়। এর পর সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান সহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাসা বাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, হামলা, লুটপাট চলতে থাকে। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে পৌরশহর থেকে গ্রামীন হাট-বাজার ও  গ্রামে। লুটপাট থেকে বাদ পড়ছেনা গৃহপালিত পশুও। 

প্রেসক্লাব সভাপতি ও পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের বাসায় অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে প্রেসক্লাব সভাপতি বিপুলসহ তার পরিবারের ৫জন আহত হয়। পরে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লবের বাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট শেষে দখল করে নেয়া হয়। 

এসময় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জানিয়েও কোন প্রতিকার মেলেনি। তবে কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র বারেক মোল্লা ও কলাপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি বিপুলকে হামলা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার করেছেন বলে জানায় সূত্রটি।

স্থানীয় হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন আলমগীর হাওলাদার (৫০), ইমন আহসান (২৫), নাসির হাওলাদার (৫০), হোসেন (৪০), সোহাগ (৪২), রবিউল (২৫), মন্নান (৬৩), মোশারেফ (৫০), আইউব (৬৮), নিয়াজ (২৮), বিপুল (৬০), বিকাশ (৪০), মিনতি (৫০), সাইদুর (৩৫), হারুন (৪৫), ফারুক (৫০), সীমান্ত (৩৮)। 

এছাড়া গুরুতর আহত অনেককে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে বরিশাল প্রেরন করা হয়েছে। নাসির বর্তমানে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেলে মৃত্যুর সংগে পাঞ্জা লড়ছে। 

কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক আবদুল মোতালেব তালুকদার বলেন, ’বিএনপি’র ক্যাডাররা আওয়ামীলীগের অন্তত ৬০০ নেতা-কর্মীর বাড়ী ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। 

আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ৩০টি কার্যালয় ভাঙচুর লুটপাট করা হয়েছে, এখনও ভাঙচুর লুটপাট অব্যাহত আছে। থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে।’  

উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান চুন্নু বলেন, হামলাকারীরা কেউ আমাদের দলের নয়। দলের দীর্ঘ বছরের দুর্দিনে তাদের কখনও দেখা যায়নি। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে কেউ কেউ হামলা ভাঙচুর করতে পারে। বিএনপি এর দায় নেবে না, এরা সুযোগ সন্ধানী।

কলাপাড়া ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম বলেন, শান্তি শৃংখলা রক্ষায় আমরা আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ইতিমধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতা-কর্মী সহ উপজেলা বিএনপি’র নেতা কর্মীদের সাথে আমরা সভা করেছি। জেলা প্রশাসনের ৪/৫জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হামলা, ভাঙচুর ও নাশকতা রোধে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়