শিরোনাম
◈ এবার সেনাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বললেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ◈ বিদেশে অসুস্থ হয়ে পড়া নারী শ্রমিকরা বেশির ভাগই জরায়ুর সমস্যায় ভুগছেন ◈ ১৯০ বন্দীর বিনিময় করলো রাশিয়া-ইউক্রেন আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় ◈ সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির শঙ্কা, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা আবহাওয়ার পূর্বাভাসে যা জানাগেল ◈ নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার ◈ আ’লীগ নেতাদের কুমিল্লা সীমান্তে বৈঠকের গুঞ্জন ◈ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার : সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক ◈ নিজ বাসা থেকে কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ উদ্ধার, পুলিশের ধারণা ৪-৫ দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে ◈ লালন মেলায় চুরি হওয়া ১৬ মোবাইলসহ যুবক আটক ◈ বেতন গ্রেড না বাড়ালে টিকা নয়, আল্টিমেটাম স্বাস্থ্যকর্মীদের !

প্রকাশিত : ২৭ জুলাই, ২০২৪, ০৬:১০ বিকাল
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইবো: নিহত আলমগীরের বাবা

ফয়সাল চৌধুরী, কুষ্টিয়া: [২] ঢাকায় গত ১৯ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রামপুরায় বিটিভি ভবন এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন কুষ্টিয়ার বাসিন্দার ও গাড়িচালক আলমগীর শেখ। আলমগীর কুমারখালীর উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের মুদি দোকানি ইজারুল হকের ছেলে।

[৩] ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার গুলিবিদ্ধ মরদেহটি গত রোববার (২১ জুলাই) গ্রামের বাড়িতে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

[৪] নিহত আলমগীরের বাবা ইজারুল হক বলেন, সংসারের হাল ধরতে জীবিকার তাগিদে প্রায় ২০ বছর আগে রাজধানী ঢাকায় যায় বড় ছেলে আলমগীর শেখ। গত ৮ বছর ধরে ঢাকার রামপুরা এলাকায় হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের গাড়ির চালক হিসাবে কর্মরত ছিলো। এতে যা বেতন পেতেন তা দিয়ে ছেলেমেয়ের পড়াশোনা, বাসা ভাড়াসহ সংসার চালাতে রিতিমত হিমশিম খেতে হত তাই  সময় পেলে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাত। আমি বুড়ো মানুষ। বড় ছেলেই ছিল সকলের ভরসা। ঘরের সঙ্গে ছোট দোকানে তেমন বেচাকেনা হয় না। খুব দুশ্চিন্তায় আছি পরিবার নিয়ে। আর ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইবো।

[৫] আলমগীর শেখ পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে বড়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই গত শনিবার (২০ জুলাই) গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে লাশ পৌঁছে দেয় হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের লোকজন। আর রোববার সকালে কসবা দাড়িগ্রাম সামাজিক কবরস্থানে মরদেহটি দাফন করা হয়। পরিবারে তার বাবাসহ বয়ো:জ্যেষ্ঠ মা আলেয়া খাতুন, স্ত্রী রিমা খাতুন (৩০), মেয়ে তুলি খাতুন (১১), ছেলে আব্দুল আওলাদ (৭) ও ছোট ভাই আজাদ হক (১৮) রয়েছেন।

[৬] কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ছেলেকে হারানোর শোকে কাঁদতে কাঁদতে নিহত আলমগীর শেখের মা আলেয়া খাতুনের কান্না যেন থামছে না। নিহত আলমগীর শেখের মা আলেয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে আলমগীর খুব ভালো এবং নামাজি ছিল। গুলি খেয়ে গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে ছিল। সেখানে থাকা সহকর্মীরা আমার ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সেখানে চিকিৎসা করা হয়নি। বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলেটা মরে গেছে। হেলিকপ্টার থেকে তিনটি গুলি করে ছেলেকে মারে ফেলেছে। আমার বেটাতো আর ফিরে আসবে না। এখন ওর বউ ছোয়ালপালের দেখবি কিডা? বাড়ি ছাড়া জাগা জমি বলতে কিচ্ছু নাই। কীভাবে চলবে ওর সংসার? সরকার যদি একটু দেখতে তবেগা বাঁচতাম।’

[৭] নিহত আলমগীর শেখের স্ত্রী রিমা খাতুন বলেন, চাকরির টাকায় সংসার চলতো না। সেজন্য ও (স্বামী) অবসরে পাঠাও অ্যাপে মোটরসাইকেল চালাতো। এখনতো সব শ্যাষ। শ্বশুর, শাশুড়ি, ছেলে, মেয়ে নিয়ে কী করে খাব? কোম্পানি ও সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। 

[৮] আলমগীরের ছোট ভাই আজাদ হক জানান, আহত আলমগীরকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তার কোম্পানির সহকর্মীরা। তবে চলমান পরিস্থিতিতে সেদিন হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ছিলো না। চিকিৎসা পায়নি। ফলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পর হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স করে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। শরীর থেকে গুলিও বের করা হয়নি। গুলিসহ ভাইকে কবর দেওয়া হয়েছে।

[৯] কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চারজন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

[১০] কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কয়েকটি ঘটনা শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতা করা হবে। নিহতের পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি। সম্পাদনা: এ আর শাকিল

প্রতিনিধি/এআরএস

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়