শিরোনাম
◈ বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার সময় জীবননাশের শঙ্কায় ছিলাম: দাবি হাথুরুসিংহের ◈ জাতীয় পরিচয়পত্রের অসুন্দর ছবিটি ঘরে বসেই বদলাবেন যেভাবে ◈ বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল প্রকল্প স্থগিত করলো ভারত ◈ ‘৫ বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে খরচ ২৩০০ কোটি, তা ৭০০ কোটিতে নামানো সম্ভব’ ◈ নারী সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ কোরআন-হাদিসের লঙ্ঘন, বললেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ◈ রামপালের চেয়ে ৬০% কম: মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৮.৪৫ টাকা ◈ সোনার খোঁজে নেপাল যা‌চ্ছে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস দল ◈ সংসদীয় সংস্কারে রাষ্ট্রপতির স্বাধীন সিদ্ধান্তের পক্ষে বিএনপি, ২২ এপ্রিল তৃতীয় দফা বৈঠক ◈ ডিসেম্বরে নির্বাচন আদায়ে সোচ্চার বিএনপি, সর্বদলীয় জনমত গঠনে জোর, চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ◈ সিলেটে বাংলা‌দেশ অলআউট ১৯১ রা‌নে, দিন শে‌ষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ বিনা উই‌কে‌টে ৬৭

প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০২৪, ০৫:৪৯ বিকাল
আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দুর্ভোগে খুলনা মহানগরীর মানুষ, তলিয়ে যাচ্ছে পথঘাট, ঘরে ঢুকছে পানি

জাফর ইকবাল, খুলনা: অকার্যকর স্লুইচ গেট। নদীতে জোয়ার এলেই প্রবেশ করে পানি। বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তা-ঘাট, এমনকি পানি প্রবেশ করে ঘরের মধ্যেও। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ড্রেনে বর্জ্য জমে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। দিনে-রাতে পানিতে তলিয়ে যায় পথঘাট। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন খুলনা মহানগরীর ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ষাটের দশকে নির্মিত স্লুইচ গেটগুলোর অধিকাংশ অকার্যকর ও অব্যবস্থাপনার কারণে ভৈরব নদের জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। এছাড়া অপরিকল্পিত সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ, নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ না করা, উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের ধীরগতিসহ কেসিসির কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখানকার মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে।

ভুক্তভোগীরা জানায়, নদীর জোয়ারের পানিতে নাকাল খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলীর রোডের বাসা-বাড়ি, দোকান, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স-সহ গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়।

বিশেষ করে নগরীর টুটপাড়া মেইনরোড, বড় খালপাড়, মোল্লাপাড়া, জিন্নাহপাড়া, টিবি ক্রসরোডসহ ৩০ ও ৩১ নং ওয়ার্ডের একাধিক এলাকা প্লাবিত হয় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে। প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় এসব এলাকা। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।

খুলনার টুটপাড়া দিলখোলা রোডের বাসিন্দা দিনমজুর মো. দুলাল বলেন, বর্ষা মৌসুমের ৩ মাস এমন দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। বর্তমানে প্রতিদিন দুপুর আড়াইটা থেকে বাড়িতে পানি উঠতে শুরু করে। সেই পানি প্রায় সন্ধ্যা ৬টা-৭টা পর্যন্ত থাকে।

আবার রাত আড়াইটা থেকে পানি উঠতে শুরু করে। দুই দফায় প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা পানিবন্দি থাকেন তারা। ফলে অমানবিক জীবন-যাপনের পাশাপাশি দিনে অধিকাংশ সময় পার হয় পানির হাত থেকে আসবাবপত্র বাঁচাতে।

গৃহিণী কোহিনুর বেগম বলেন, নোংরা এসব পানির কারণে রোগ ব্যাধির আশঙ্কাতো আছেই তারপরও সাপ, পোকামাকড়, ড্রেনের ময়লা ঘরে প্রবেশ করে। রান্না ঘরে হাঁটু সমান পানি আবার রাইস কুকারে রান্না করতে গেলে বিদ্যুৎ শর্টের ভয় রয়েছে। অধিকাংশ দিনই শুকনো খাবার খেতে হচ্ছে।

কেসিসির ৩১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আরিফ হোসেন মিঠু বলেন, আমার ওয়ার্ডের ইসলামপাড়া, আমতলা, মোল্লাপাড়া, মুজাহিদপাড়া এবং মতিয়াখালী এই পাঁচটা এলাকা প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। তিন চার বছর ধরে এমন হচ্ছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর একটা ব্যবস্থা করার আশ্বাস সবাই দিয়েছে কিন্তু আমরা সমাধান পাচ্ছি না।

আর মূল সমস্যা হলো মাহাবুব ব্রাদার্স ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটি স্লুইচ গেট ভেঙে ফেলেছে। আর এদের কাজ এত ধীরগতি যার কারণে আমাদের দুর্ভোগ বাড়ছে। মেসার্স সেলিম নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানও বাঁধ দিয়ে কাজ করছে। এছাড়া স্লুইচ গেটটা একেবারে খারাপ। আমার নিজের বাড়িতে দীর্ঘদিন পানি উঠছে। আমি নিজেই অসুবিধায় আছি, আমার জনগণও অসুবিধায় আছে।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধারাবাহিক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখানে মূল যে সমস্যাগুলো হচ্ছে। আমাদের নগরপিতা এবং সংশ্লিষ্ট যে দপ্তরসমূহ রয়েছে সেই দপ্তরের কর্মকর্তারা উদাসীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং কোনো প্রকার জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতার মধ্যে নাই। যে কারণে স্লুইচগেটগুলো একেবারেই অচল এবং জোয়ারের পানি ঘরে উঠে যায়। একেবারে ঘর, বাথরুম, টয়লেট সবমিলে একাকার হয়ে যায়।

মানুষের জীবন শুধু অসহনীয় নয়, অসহনীয়তারও চরম পর্যায়ে ছাড়িয়ে গেছে। সুতরাং এ অঞ্চলের মানুষ কেমন করে বসবাস করে এটা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক মো. আনিসুজ্জামান বলেন, চলমান উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলেই মিলবে সমাধান। খুলনা শহরের পানি অপসারণের জন্য ৭টি পয়েন্টে ১৯টি স্লুইচ গেট ও ৩৮টি আউটলেট রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি স্লুইচ গেটে কাজ চলছে।

নগরীর পানি অপসারণের জন্য রূপসায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বুস্টার পাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৬ মাসের মধ্যে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার সমস্যা কাটবে আশা করছি।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়