শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৮ জুলাই, ২০২৪, ১২:৪৬ রাত
আপডেট : ১০ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন বিকল্প নৌপথে যাত্রীবাহী ট্রলারে গুলিবর্ষণ

জিয়াবুল হক: মিয়ানমারের সংঘর্ষের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে আসা যাত্রীবাহী দুইটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের ঘোলার এলাকার অতিক্রমের সময় ট্রলার ২টিকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ।

তিনি জানান, দুপুর ১২ টার দিকে সেন্টমার্টিন ঘাট থেকে ৭৫ যাত্রী নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশে যাত্রা দেয় এফবি নাইম ও এফবি রাশেদ নামের দুইটি ট্রলার। একসঙ্গে যাত্রা দেয়া ট্রলার দুইটি বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করে বঙ্গোপসাগর অতিক্রম করে নাফনদীর মোহনায় প্রবেশ করছিল দুপুর ২ টার দিকে। এ সময় মিয়ানমারের অংশ থেকে একের পর এক গুলি বর্ষণ শুরু করা হয়। ট্রলার চালকরা কৌশলে ট্রলার চালিয়ে গেলেও টানা আধা ঘণ্টা ধরে ট্রলার দুইটিকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে। এতে কোনো যাত্রী হতাহত না হলেও ট্রলারে গুলি লেগেছে। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে ট্রলার ২টি নিরাপদে শাহপরীরদ্বীপের জেটিতে অবতরণের সুযোগ হয়েছে। ট্রলার ২টি ঘাটে পৌঁছা পর্যন্ত ওপার তেকে টানা গুলি বর্ষণ করা হয়।

তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে দূরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের এলাকায় ট্রলার দুইটি চলাচল করছিল। এরপরও মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণ করায় চালকসহ দ্বীপবাসির মনে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

কারা গুলি করেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যতটুকু জানা গেছে মিয়ানমারের ওপারের অংশটি নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এরাই গুলি করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে সেন্টমার্টিনের ২টি ট্রলারে আবারও গুলি বর্ষণের বিষয়টি জেনেছি। এব্যাপারে উধ্বর্তন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। উর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এর আগে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জেরে ১ জুন বিকেলে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হওয়া পণ্যসহ ১০ যাত্রীর এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে গুলি বর্ষণ করা হয়। এছাড়া ৫ জুন সেন্টমার্টিনের স্থগিত হওয়া একটি কেন্দ্রে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফল নির্ধারণের জন্য ভোট গ্রহণ হয়। 

আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেরার পথে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রলারকে লক্ষ্য করে একই পয়েন্টে ফের গুলি করা হয়।  ৮ জুন আরও এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় একই পয়েন্টে। সবশেষ ১১ জুন একটি স্পিড বোটকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ হয়। প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় ঘটেছে। গুলিবর্ষণের এসব ঘটনায় হতাহতের না হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দ্বীপে খাদ্য সংকট ও জরুরি আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। 

গত ১২ জুন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে যাত্রীদের আসা-যাওয়া ও পণ্য নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ১৩ জুন থেকে টেকনাফের সাবরাং মুন্ডার ডেইল উপকূল ব্যবহার করে শুরু হয় যাত্রীদের আসা-যাওয়া। ১৪ জুন কক্সবাজার শহর থেকে দ্বীপে পণ্য নিয়ে যায় জাহাজ। আর বিকল্প পথ হিসেবে শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে সীমিত পরিসরে কিছু নৌযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর থেকে কিছু দিন পর পর বিকল্প নৌ পথটি ব্যবহার করে সেন্টমার্টিনের আসা যাওয়া চলে আসছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়