শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৫ জুলাই, ২০২৪, ০৭:৪৮ সকাল
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফরিদপুরে আদালতের নির্দেশে ১০ মাস পরে কবর থেকে নারীর লাশ উত্তোলন

সনত চক্র বর্ত্তী, ফরিদপুর: ফরিদপুরের সদরপুরে দাফনের পাঁচদিন পরে জীবিত অবস্থায় ফিরে আসা হাসি বেগম সন্দেহে দাফন করা সেই নারীর লাশ দাফনের ১০ মাস পরে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

রোববার (১৪ জুলাই) আদালতের নির্দেশে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ের শৌলডুবি গ্রামের গোরস্থান থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার লাশটি উত্তোলন করা হয়। এরপর লাশের পরিচয় সনাক্তের জন্যে লাশের বিভিন্ন অঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করে ফরিদপুরের মর্গে পাঠানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিট্রেট দীপ্ত চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহেন শাহ, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. মো: ইউনূস আলী, মানিকদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাচ্চু সহ অন্যরা।

জানা গেছে, গতবছর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা কুমের কচুরিপানার ভেতর থেকে সনাক্তের অযোগ্য একটি অর্ধগলিত নারীর লাশ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। এরপর শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমান দাবি করেন লাশটি তার মেয়ে হাসি বেগমের। ওই লাশ উদ্ধারের ১৩ দিন আগে এক সন্তানের জননী হাসি বেগম তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বিদ্যুৎ বিল দেয়ার কথা বলে সদর পুর সদরে যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। তারপর থেকে হাসি বেগমকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

নাউডুবা গ্রামে ওই লাশ উদ্ধারের পর হাসির বাবার দাবি অনুযায়ী লাশটি হাসি বেগমের বলে সনাক্ত করা হয় এবং পরেরদিন ওই গ্রামের মদিনাতুল উলুম কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় হাসির বাবা হাবিবুর রহমান তার মেয়ের জামাতা মোতালেব শেখের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুমের একটি অভিযোগও করেন থানায়।

অন্যদিকে হাসি বেগমের স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন যে তার স্ত্রী নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়ি পালিয়ে গেছেন। তবে পুলিশ মোতালেব শেখের অভিযোগ গুরুত্ব না দিয়ে হাসির বাবার অভিযোগ আমলে নিয়ে মোতালেব শেখকে আটক করে থানার গারদে আটকে রাখে।

এদিকে এ খবর মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ার পর ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগম মোবাইল ফোনে তার মাবাবার সাথে যোগাযোগ করে জানায় যে সে জীবিত আছে। এবং ওই লাশ দাফনের পাঁচদিন পর সে বাড়িতেও ফিরে আসে। এ অবস্থায় পুলিশ মোতালেব শেখকে ছেড়ে দিয়ে হাসি বেগমকে আটক করে আদালতে পাঠায়। তবে আদালত থেকে মুক্ত হয়ে হাসি বেগম আবার তার পরকিয়া প্রেমিকের কাছে ময়মনসিংহের নান্দাইলে চলে যান।

এ অবস্থায় সম্প্রতি ভাঙ্গা থানার মানিকদাহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের ইয়াদ আলী ব্যাপারী দাবি করেন, হাসি বেগম সন্দেহে মদিনাতুল উলুম কবরস্থানে দাফন করা সেই লাশটি তার মেয়ে কল্পনা বেগমের। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত লাশের পরিচয় নির্ণয় করার জন্য কবর থেকে লাশটি উত্তোলনের নির্দেশ দেন।

নির্বাহী ম্যাজিট্রেট বদরুজ্জামান রিশাদ সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের নির্দেশে রোববার কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে লাশের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্ট পাওয়ার পর তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়