সোহাগ হাসান, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচাতো ভাইকে ফাঁসাতে তার আরেক ভাই জাহিদুল ইসলাম ফারুক নিজের মাথা নিজেই কেটে রক্তাক্ত করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে একটি মিথ্যা মামলা সাজানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের।
বুধবার (১০ জুলাই) সকালে সরজমিনে গেলে বেলকুচির তামাই বাজার (পুর্বপাড়া) এলাকায় ভুক্তভোগী হাজী আব্দুল বারিকের ছেলে আব্দুল আলীম, লিটন শেখ, আব্দুল মমিন ও ইমন বলেন, জমি সংক্রান্ত জেরে আমাদের মামলায় ফাঁসাতে আমাদের চাচাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম ফারুক নিজের মাথা নিজেই কেটে রক্তাক্ত করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমাদের বাপ-দাদার পৈত্তিক সম্পত্তি বাটোয়ারা না করে জোর পূর্বক রাস্তার সামনে থেকে দখল করার চেষ্টা করে। দখল না দিলে ফারুক নিজের মাথা নিজেই কেটে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, মৃত হাজী মোকছেদ আলীর ছেলে হাজী মতিয়ার রহমান, হাজী লুতফর রহমান, হাজী মতিয়ারের ছেলে ফারুক, আব্দুল্লাহ বিভিন্ন সময় বহিরাগত লোকজন এনে আমাদের প্রাণনাশের হুমকী ও জোর পুর্বকভাবে আমাদের জায়গা দখলের চেষ্টা করে। আমাদের যাতায়েতের রাস্তা টিনের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেয়।
তারা আরও বলেন, জমি বিক্রির কথা বলে ফারুক ও তার বাবা মোকছেদ আলী ৫ লাখ টাকা নেয়। কিন্তু ৫ বছর অতিক্রম হলেও এখন পর্যন্ত জমি দলিল করে দেন নি। যা এলাকার মুরুব্বীরা অবগত রয়েছে। শুধু তাই নয় তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় একাধিক বার শালিশি বৈঠক হলেও তারা কোন কিছুই মানেন না। বরং বহিরাগত লোকজন এনে এলাকায় সংঘর্ষ সৃষ্টি করে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির শহিদুল ইসলাম, হাজী মো: হেলাল উদ্দিন, মো: সাইফুল ইসলাম, হাজী মো: হিরণ প্রামানিক, হাজী আব্দুল মান্নানসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, হাজী মতিয়ার গংরা এলাকার কোন শালিশ মানে না। তারা বহিরাগত লোকজন এনে এলাকায় ত্রাত্রের সৃষ্টি করে। থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে।
তারা আরও বলেন, হাজী আব্দুল বারিকের ছেলে আব্দুল আলীম, লিটন শেখ, আব্দুল মমিন গংদের জোর পুর্বক ভাবে জায়গা দখলের চেষ্টা করে এবং যাতায়েতের রাস্তা টিনের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেয়। এখানে কোন মারামারি হানাহনি কোন কিছু হয়নি। ফারুক নিজের মাথা নিজেই কেটে রক্তাক্ত করে আব্দুল মমিন গংদের ফাঁসানোর জন্য পায়তারা করছে।
এ ব্যাপারে জাহিদুল ইসলাম ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার চাচাদের সাথে জমি জমা নিয়ে বিরোধ আছে। তিনি আরো বলেন, আমার ক্রয় করা সম্পত্তিতে টিনের বেড়া দিয়েছি। আমার চাচাতো ভাইরা জোড়পূর্বক আমাদের বাড়ীতে এসে আমাকে মারপিট করে আহত করেছে।
ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে মিমাংশার জন্য দুই পক্ষকে নিয়ে বসা হয়েছিলো। পরে একটি রায় ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু হাজী মতিয়ার গংরা সেই সিধান্ত মানেনি।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলকুচি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মজিবুল ইসলাম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছি। আমি উভয়পক্ষকে শান্তি রক্ষার্থে মিমাংশার জন্য বলেছি।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :