শিরোনাম
◈ স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ আবার ফিরেছেন বাংলাদেশ দলে ◈ দক্ষিণখানে পুলিশের পোশাক,নকল পিস্তলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ◈ ৪ স্ত্রী ও দুই গার্লফ্রেন্ডের টাকায় চলে সংসার, খুঁজছেন নতুন স্ত্রী ! ◈ রোনালদোর গোলে আল নাসরের নাটকীয় জয় ◈ ঝিনাইদহে পিকআপভ্যানের চাপায় নারী নিহত ◈ আড়াই মাস পর প্রকাশ্যে, মধ্যরাতে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মিছিল (ভিডিও) ◈ আমার কাছে বিশ্বকাপ খেলা মুখ্য নয়, ক্যারিয়ারের বাকি সময়টা উপভোগ করতে চাই: মেসি ◈ অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়াকে টানা ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ◈ ‘এলিয়েনরা সত্যিই আছে’, নাসার ফিল্ম নির্মাতা সাইমন হল‌্যান্ডের দাবি ◈ নির্বাচন নিয়ে সরকারের বক্তব্যে সন্দেহ তারেকের : সহযোগীদের খবর

প্রকাশিত : ০৫ জুলাই, ২০২৪, ০৬:৫৫ বিকাল
আপডেট : ১৪ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেষ জীবনে শখ পূরনে ব্যয় ১০ লাখ টাকা

সাবরীন জেরীন, মাদারীপুর: ছোট বেলায় নৌকা বাইচ দেখে প্রবল আগ্রহ জাগে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের ভাটবালি গ্রামের দেলোয়ার আকনের। কিশোর বয়সে নৌকা বাইচের নৌকায় বৈঠা চালক হিসেবে তার সখ পূরণ করলেও এক সময় তৈরী করেন ৮০ হাত একটি বাইচের নৌকা।

সেটা দিয়ে মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নৌকা বাইচে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। নৌকাটি অকেজো হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন দূরে ছিলেন নৌকা বাইচের। 

জীবনের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, আশা-নিরাশার মধ্যেও তার জীবনে একটি বড় জায়গা করে নেয় বাইচের নৌকা। বাইচে প্রতিযোগিতা রীতিমত তার নেশায় পরিণত হয়। শখ পূরনে পিছপা হননি ষাটোর্ধ দেলোয়ার আকন। তার সাথে বাইচে যাওয়া বৈঠা কর্মীদের অনুরোধে সিদ্ধান্ত নেন নতুন বাইচের নৌকা তৈরীর।

যেমন চিন্তা তেমন কাজ। কয়েক মাস আগে নতুন একটি বাইচের নৌকা তৈরীর কাজে হাত দেন তিনি। ১০০ হাত লম্বা একটি বাইচের নৌকা তৈরীর মূল কাজ শেষ করেছেন। 

নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বসে তৈরী করা হচ্ছে নৌকাটি। ৬ জন মিস্ত্রির সব মিলিয়ে প্রায় দুই মাস সময় লেগেছে বলে জানায় মিস্ত্রিরা। নৌকাটি তৈরীতে তেমন কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়নি বলেও জানায় মিস্ত্রিরা। সাজগোজ ছাড়া তেমন কোন কাজ বাকি নেই বললেই চলে। 

নৌকাটি তৈরী করতে সাড়ে দশ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া চলতি বছরে নৌকা বাইচ হলে নতুন নৌকা নিয়ে প্রতিযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

মাদারীপুরের উল্লেখযোগ্য নদ-নদী পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, কুমার ও পালরনদীসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার যেখানেই নৌকা বাইচ হবে সেখানেই অংশ নিবেন তিনি। 

তার কয়েকজন বৈঠা কমীর সাথে কথা বলে জানা যায়, নতুন নৌকাটি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বেশ আগ্রহী তারা। এছাড়া কিছু কিশোর-যুবকেরাও জীবনের প্রথম বাইচের নৌকায় বৈঠা বাইতে পারবেন বলে বেশ আনন্দিত।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও শখ পূরনের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হলেও দেলোয়ার আকনের মধ্যে কোন চিন্তার ছাপ নেই। আছে আনন্দের বহি:প্রকাশ। এ বয়সে এসে সে যেন নতুন কোন আনন্দময় জীবনের উপজীব্য হিসেবে বরণ করছেন নৌকাটিকে।

নৌকার কারিকর (মিস্ত্রি) সুনীল বাড়ৈ বলেন, নৌকাটি মালিকের মনের মত করে তৈরী করা হচ্ছে। আধুনিক তেমন কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়নি নৌকাটি তৈরীতে। ৬ জন মিস্ত্রির প্রায় ২ মাস সময় লেগেছে। এখন শুধু রং ও সাজগোজের কাজ বাকি আছে। 

নৌকার মালিক দেলোয়ার আকন বলেন, ১৬ বছর বয়স থেকে বাইচের নৌকায় বৈঠা বাইতাম। জয় পরাজয়ের মধ্যদিয়ে দিনগুলো কাটলেও ১৫ বছর আগে একটি নৌকা তৈরী করেছি। সেটি নিয়ে প্রতিযোগিতা করে কখনো পরাজিত হননি।

শেষ জীবনে নতুন প্রজন্মকে এ সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এ উদ্যোগ আমার। সাড়ে দশ লাখ টাকা ব্যয় হবে নৌকাটি তৈরী করতে প্রশাসন থেকে কিছু সহযোগিতা পেলে ভালো হতো।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. মারুফুর রশীদ খান বলেন, সংস্কৃতি ধরে রাখতে তার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তার মতো আরও অনেকেই এগিয়ে আসুক এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে। সহযোগিতা চাইলে সাধ্যমত চেষ্টা করা হবে।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়