মহসিন কবির : রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের নির্ভরযোগ্য পরিবহন খুঁজছেন কর্মজীবী নারীরা। নারীদের জন্য বিআরটিসি বাস কিছুদিন চলাচল করলেও বর্তমানে আর দেখা যায়না। নারীদের যাতায়াত নির্বিঘ্নে করতে নারী উদ্যোক্তা তাসনিয়া আতিক ঢাকার রাস্তায় একটি পরিবহন পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছেন।
যার নাম দিয়েছেন ‘উইমেনস শাটল’। যা বিশেষভাবে মহিলাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তবে যাওয়া-আসা ৫০০ টাকা বাস ভাড়া নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা করছেন নেটিজনরা।
ঢাকার মিরপুর, গুলশান, বসুন্ধরা ও উত্তরার মতো ১২টি রুটে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যানবাহন পরিচালনা করবে ‘উইমেন্স শাটল’। নারী যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে এসব যানবাহনে নারী নিরাপত্তাকর্মী, আইপি নজরদারি ক্যামেরা, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র এবং স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতো উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
ফেসবুক পেজ উইমেনস শাটল থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, ঢাকায় কর্মজীবী নারীদের যাতায়েতের জন্য বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসা থেকে অফিস ও অফিস থেকে বাসায় আনা-নেওয়ার জন্য জনপ্রতি ২৫০-২৫০ মোট ৫০০ নির্ধারণ করা হয়েছে। যারা এই বাসে যেতে চান তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। মিরপুর, বসুন্ধরা, উত্তরা ও মোহাম্মদপুর বাসিন্দারা আপাতত এ সুযোগ পাবে।
তবে নভেম্বর মাসের জন্য যাওয়া-আসা ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চার রুটের যাওয়ার রেজিস্ট্রেশনের জন্য আলাদা পেজ দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুক পেজ জানা যায়, একটা বাস মিরপুর থেকে বসুন্ধরা যাবার সময় ৬-৮ জায়গায় থামবে। আর এই রাস্তায় ৩০০-৩৫০ জন যাত্রী উঠে করবে। দিন ও রাতে বাস চলাচল করবে। ৩০ জনের এসি কোস্টার বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করবে। সবাইকে সাকলে নিয়ে যাবে ও সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আনবে।
ফেসবুক পেজে আরও বলা হয়েছে, পিক আওয়ারে উবার, পাঠাও, সিএনজি করে যারা অফিস বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার সময় বিড়ম্বনায় পড়েন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেন, তাদের সমস্যা সমাধানের টার্গেট করেই প্রথম সার্ভিসটা আমরা চালু করেছি। এই প্রাইসেই আমাদের অপারেশন খুব দ্রুত চালু হচ্ছে।
ফেসবুক পেজটির কমেন্ট বক্সে সমালোচনা করে সুমাইয়া সামান্থা নামে একজন লিখেছেন, ‘যে প্রতিদিন ৫০০ টাকা জাস্ট যাতায়াতের পেছনে ব্যয় করবে তার কি গাড়ি থাকার কথা না? Nothing but pure business in the name of women safety.’
মোহাম্মদ নাসিদ নামে আরও একজন লিখেছেন, ‘দিনে ৫০০ মানে ওয়ার্কিং ডে হিসাবে মাসে ১২৫০০ টাকা। আমাদের যেসব বোনেরা মোটামুটি একটা সেভিংস করেছেন কয়েক লাখ টাকা যেটা অলস পরে আছে, তারা সেই টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে কার লোন নিয়ে ছোট একটা গাড়িই কিনে ফেলতে পারবেন আর এই টাকা দিয়ে সেই কার লোন শোধ করতে পারবেন।’
জান্নাত আরা ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, ‘ধনীদের জন তৈরি করে ধনী দের এরিয়ায় চালু ব্যাপার টা ভাল হইসে। আর যে সব সার্ভিস বলতেসেন বিপদ আসলে কাজে কয়টা আসবে সেটার ও ঠিক নাই। আর প্রাইজ? ১৫০০০ এর নিচে অনেকের সংসার চলে সেখানে শুধু যাতায়াত তাও একজনের ১৫০০০?? নিজে টাকা কামাই করতে অন্যদের টাকা নাই করে দিলে হবে?
শুরু টা সহজ হবে না।অনেক খরচ ও হবে।চলবে কিনা রিক্স সব ই বুঝলাম বাট।মানে ভাল দামে কম হইলে বাঙালি বেশি খায়।লাভ টাও হইতো।উচ্চ লাভের লোভে পুরা টাই লস প্রজেক্ট লাগতেসে।’
মোহাম্মদ সাদমান আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, শুভ কামনা আপু আপ্নাদের জন্য। প্রাইজিংটা খুব হতাশাজনক যদিও কারণ ৫০০ টাকা/প্রতিদিন দিয়া বাস সার্ভিস, মাসে ২০-২৪ দিন অফিস হইলে ১০০০০-১২০০০টাকা
+ আপনাদের শাটল কি বাসা থেকে পিক/ড্রপ করবে? না করলে আরো ১-৩হাজার টাকা। এরচে তো স্কুটি কিনে ফেলা ভালো আপুদের, আমার বাইকেই আমি মাসে ৩হাজার টাকার তেল এ অফিস+নরমাল ঘুরাঘুরি করে ফেলি।
সোনাম আক্তার মোহাম্মদ সাদমান আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, দিনে ৫০০ টাকা শুধু ট্রান্সপোর্টেশনে দিতে পারবে যারা তারা কী স্ট্রাগলিং উইমেন? দিনে ৫০০ টাকা শুধু বাস ভাড়া কে দিতে পারবে? সমাজের বিত্তশালী মেয়েদের জন্য উদ্যোগ হলে এটা ঠিক আছে। যদিও বিত্তশালীদের গাড়ি আছে, তাদের এই বাস দরকার নেই। তো কর্মজীবী মেয়ে যারা মাসে ১৫০০০-২০০০০ টাকা ইনকাম করে বা ছাত্রী তারা কী করবে? বিপদে এই মেয়েগুলোই পড়ে। উদ্যোগ নেয়া সমস্যা না। কিন্তু টাকা ইনকাম করার বিসনেস কে “আমি মেয়েদের জন্য খুব চিন্তা করি তাই কর্মজীবী মেয়েদের জন্য বাস ব্যবস্থা করছি” বলে “উইমেন এমপোয়ারমেন্টে” নিজের ভূমিকা দেখানোর আকুলতা বিষয়টা খুব বিচ্ছিরি লাগলো।
আপনার মতামত লিখুন :