মোঃরফিকুল ইসলাম মিঠু ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবন থেকে পড়ে মো. ইব্রাহিম (৩৫) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায় । এ ঘটনায় আলীম উল্লাহ (২৩) ও মো. শাকিল (২০) নামের আরও দুই শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর সড়কের ১৩ নম্বর প্লটের নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ভবনটির মালিক হাজী ফয়েজ আহমেদ আকন্দ ভবনটি বিডিডিএল হাউজিং লিমিটেড ডেভেলপার কোম্পানিকে চুক্তিতে দেন। নির্মাণকাজ করছে আইটি কনস্ট্রাকশন নামের একটি কোম্পানি।
নিহত ইব্রাহিম ভোলার সদর উপজেলার চর ইলিশা গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে। আহতরা হলেন—একই উপজেলার আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে আলীম উল্লাহ (২৩) ও মো. হাসিমের ছেলে মো. শাকিল (২০)। আহতরা বর্তমানে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মো. সোলেয়মান বলেন সন্ধ্যার দিকে বিকট শব্দ পেয়ে ভবনের পেছনে গিয়ে দেখতে পাই, ৩ শ্রমিক পঞ্চম তলা থেকে নিচে পড়ে গেছে। ঘটনাস্থলেই একজন মারা গেছেন। বাকি দুজন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পাশের ভবনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ডেভেলপার কোম্পানি ও ঠিকাদারের অবহেলায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। তারা খরচ কমায়ে গিয়ে হাইরাইজ ভবনে বাঁশের মাচান দিয়ে শ্রমিকদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাজ করাচ্ছিলেন। বাঁশের পরিবর্তে স্টিলের মাচান তৈরি করে এবং নিচে যদি সেফটি জাল বিছানো থাকত, তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। ওই শ্রমিকদের সেফটি বেল্টও ছিল না।’\
ওই ভবনের নির্মাণ শ্রমিক মহসিন বলেন, ‘বাঁশের মাচানের ওপর ৩ শ্রমিক দাঁড়িয়ে ভবনটির পঞ্চম তলায় প্লাস্টারের কাজ করছিলেন। পরে মাচান ভেঙে গেলে তারা ৩ জনই নিচে পড়ে গিয়ে একজন মারা যান, দুজন আহত হন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আহতদের গুরুতর অবস্থায় পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আলীম উল্লাহর দুই পা ভেঙে গেছে এবং বুকেসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পেয়েছেন। শাকিলেরও বুকে, পায়েসহ বিভিন্ন জায়গায় আঘাত রয়েছে।’
এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামীম আহমেদ বলেন বাঁশের (মাচানের) ওপর দাঁড়িয়ে ১০ তলা ভবনের পঞ্চম তলায় প্লাস্টারের কাজ করছিলেন ওই তিন শ্রমিক। বাঁশ থেকে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই ইব্রাহিম নামের এক শ্রমিক মারা যান। আলীম ও শাকিল নামের আরও দুজন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক তাদের পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন।’