শিরোনাম
◈ ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার নিয়ে করা দাবি সত্য নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ◈ কারও লাশ যেন বেওয়ারিশ হিসেবে না থাকে: প্রধান উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ 'কী না করেছি পুলিশের জন্য', সাবেক আইজিপি শহীদুলের আক্ষেপ ◈ পুরস্কারও ঘোষণা করার পরও পুলিশকে গুলি ছোড়া সাজ্জাদ কেন ধরা পড়ছে না, যা জানা গেল ◈ মির্জা ফখরুলের সুস্থতা কামনা জামায়াতের আমিরের ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১২৪ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি ◈ রমজানে ফলের বাজার চড়া, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা ◈ সোয়া ৩ লাখ কোটি ডলার মাত্র ২৪ জনের হাতে ◈ তেল, ডাল, আটা-ময়দাসহ কিছু পণ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার ◈ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উরুগুয়ে ও ব্রাজিলের বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার দল ঘোষণা

প্রকাশিত : ০২ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৫৩ বিকাল
আপডেট : ০৩ মার্চ, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

নীলক্ষেত হকার্স মার্কেটে অগ্নিঝুঁকি, শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আলাদা ৯টি মার্কেট মিলে তৈরি হয়েছে দেশের বৃহত্তম বইয়ের মার্কেট নীলক্ষেত হকার্স মার্কেট। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ’-এর পাশ থেকে শুরু করে নীলক্ষেত বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মার্কেটগুলোকে এক নামে ‘নীলক্ষেত হকার্স মার্কেট’ ডাকা হয়।

এ মার্কেটের দোকানিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের শিক্ষা সংক্রান্ত সব পণ্যসহ আনুষঙ্গিক পণ্য সরবরাহ করে। হাজারের ওপর বইয়ের দোকান, শতাধিক ফটোকপি-প্রিন্টের দোকান, খাবার-পোশাকের দোকানসহ অন্যান্য দোকান রয়েছে হাজারখানেক। নীলক্ষেত বইয়ের মার্কেটে সবসময়ই থাকে সাধারণ মানুষের ভিড়। দোকানগুলো একটার সাথে আরেকটা সম্পূর্ণ লেগে থাকায় যেকোনও সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। একটি দোকানে আগুন লাগলে ছড়িয়ে যেতে পারে পুরো মার্কেটে।

জানা গেছে, এর আগে কয়েকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও অগ্নিনির্বাপণের জন্য মার্কেটগুলোতে এখনও নেওয়া হয়নি কোন কার্যকরী ব্যবস্থা। কয়েকটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র থাকলেও অনেক আগেই শেষ হয়েছে মেয়াদ। নেই পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থাও। ফলে আগুন লাগলে নেভানোর মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থাই নেই মার্কেটটিতে। নেই কোন ফায়ার এক্সিটও।

নীলক্ষেত হকার্স মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, হযরত বাকুশাহ, ইসলামিয়াসহ ৮ থেকে ৯টি মার্কেট মিলে গঠিত এই মার্কেটে প্রতিটি দোকান একটি আরেকটির সাথে লেগে আছে। গলিগুলোতে একজনের বেশি পাশাপাশি হাঁটার জায়গা নেই। এমনকি খালি চোখে বোঝারও উপায় নেই এখানে একাধিক মার্কেট রয়েছে। পুরো মার্কেট ঘুরে মোট ১৪টি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের দেখা মিললেও কোনোটিরই মেয়াদ ছিল না। মার্কেটের ভেতরে রয়েছে একাধিক খাবার হোটেলও। রান্নাও করা হয় মার্কেটের ভেতরেই।

দোকানিরা বলছেন, মাঝেমধ্যেই এখানে ছোট ছোট আগুনের ঘটনা ঘটে। সেগুলো ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিভিয়ে ফেলা যায়। তবে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে সেটা মার্কেটে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগবে না। সব জায়গায় বিদ্যুতের তার, দোকানগুলোর মধ্যে কোন গ্যাপ না থাকায় মুহূর্তেই সব জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া ভেতরে খাবারের দোকান থেকে এর আগেও বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

দোকানিরা জানান, মার্কেটটিতে কোন ফায়ার এক্সিট নেই। আগুন লাগলে ছোট ছোট এই গলি দিয়েই সবাইকে মালামাল নিয়ে বের হতে হয়। তাৎক্ষণিকভাবে খাওয়ার পানির লাইন থেকেই পানি সংগ্রহ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা ছাড়া অন্য কোন উপায়ও নেই।

মার্কেটের ফটোকপির দোকানের এক কর্মচারি জানান, এখানে বড় ধরনের আগুন লাগলে বাঁচার রাস্তা খুব কম। মালামাল তো পরের হিসাব জীবন নিয়ে বের হওয়াটাই কষ্ট হয়ে যাবে। অনেক বেশি দোকান ও গায়ে গায়ে অবস্থানের কারণে দাবানলের মতো আগুন ছড়িয়ে যাবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কোন ধরনের কার্যকরী ব্যবস্থা এখানে নেই। একই কথা বলেন একাধিক দোকানি।

বই ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার সময় আগুন নেভানোর যন্ত্রগুলো বসানো হয়েছে। এখন কোনোটিরই মেয়াদ নেই। আবার পর্যাপ্ত যন্ত্রও নেই। এখানে আগুন লাগলে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হবেন। পাশাপাশি জীবনের নিরাপত্তাহীনতা তো আছেই। হযরত বাকুশা হকার্স মার্কেট সমবায় সমিতির এক নেতা জানান, আমরা জানি আগুন নেভানোর জন্য এখানে পর্যাপ্ত কোন ব্যবস্থা নেই। যেহেতু হকার্স মার্কেট তাই দোকানগুলোও একটা আরেকটার সাথে লাগানো এবং সব জায়গায় এলোমেলো বিদ্যুতের তার ঝুলছে। এখানে আগুন লাগলে সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হবে। তবে আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকি যাতে আগুন না লাগে।

ছোট ছোট আগুনের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে। সেটা আমরা প্রাথমিকভাবেই নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলি। বড় কোন ঘটনা এখনও ঘটেনি। তিনি বলেন, দেশে যখন বড় বড় আগুনের ঘটনা ঘটেছে আমরা তৎক্ষণাৎ ৩০টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এনে মার্কেটের বিভিন্ন খুঁটিতে লাগিয়ে দিয়েছি এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছি যে, কীভাবে সেটি ব্যবহার করতে হয়। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করছি আমাদের দিক থেকে। এছাড়া আমরা রাতেও সিকিউরিটি গার্ডসহ কয়েকজন দোকানিকে দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেই যাতে তারা রাতে কোথাও আগুনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত নিভিয়ে ফেলতে পারে। এসব প্রস্তুতির মধ্য দিয়েই মার্কেট চলছে। 

উল্লেখ্য ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও খোলা ছিল নীলক্ষেত বইয়ের মার্কেট। সন্ধ্যা ৭টা ৪৮ মিনিটে আগুন লাগে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট কাজ করে সেসময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। খাবারের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে সেসময় ধারণা করা হয়। কেউ কেউ আবার ধারণা করেছিলেন, বইয়ের দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়