শিরোনাম
◈ রাজধানীর যেসব সড়ক কাল বন্ধ থাকবে, বিকল্প পথে চলার পরামর্শ ◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ◈ লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ কোটি টাকা পাচার : হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু ◈ উপসচিব পুলে কোটা: প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান ◈ জাহাজ থেকে ১৯ নাবিক বিদেশে পলায়ন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারালো অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ◈ ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতের কাছে এশিয়া কাপের ফাইনালে হেরে গেলো বাংলাদেশ ◈ রাহাত ফতেহ আলী খান ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা  বিপিএল মিউজিক ফেস্টে গান গাইবেন

প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:৩৫ দুপুর
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাকায় শিক্ষার্থী-সংঘর্ষ : ক্ষমতার দায় ও দুর্বলতা, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা যা মনে করেন

এল আর বাদল: এক নৈরাজ্যের শহরে পরিণত হয়েছে ঢাকা। বিশেষ করে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত, লুটপাট, হাসপাতালে হামলা পরিস্থিকে জটিল করেছে।

পুলিশ বলছে, ঢাকার কলেজেগুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্বের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তবে বিশ্লেষক ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন ,আসলে সরকারের দিক থেকে এসব নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো অবস্থান বা মেসেজ না থাকায় ছাত্ররা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

সোমবারও ঢাকার তিন কলেজের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দক্ষিণ ঢাকার কবি নজরুল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পল্টা ধাওয়ার কারণে ডেমরা ও যাত্রাবাড়ি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।- ডয়েচেভেলে

ঘটনার সূত্রপাত রোববার (২৪ নভেম্বর)। গত রাতে ছাত্ররা সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঢুকে কম্পিউটারসহ নানা মূল্যমান সামগ্রী লুটপাট করে। আগেরদিন ন্যাশনাল হাসপাতালে হামলা চালিয়েও ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট চালানো হয়। সেই রাতে ঢাকার পলিটেকনিক কলেজেও দুই গ্রুপ ছাত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷ তখনও ব্যাপক ভাংচুর চলে।

তার আগে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের ছাত্রদের মধ্যে বাসে ওঠা নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। তারপরই তীতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালিতে সড়ক অবরোধ করে৷ অবরোধের পর ট্রেনে হামলা চালানো হয়৷হামলার সময় বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু যাত্রী আহত হয়। তীতুমীর কলেজের আগে ঢাকার সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরাও স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলন করে।

শিক্ষার্থীদের নিয়মিত সংঘর্ষের কারণে পরিস্থিতি এমন যে সাধারণ মানুষদের অনেকেই বলছেন, রাস্তায় বের হতে তাদের ভয় করে। নগরবাসী বাইরে বের হওয়ার আগে কোথাও সংঘর্ষ, ভাংচুর হচ্ছে কিনা জানার চেষ্টা করছেন।

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা যা মনে করেন
পুলিশের সাবেক ডিআইজ খান সাঈদ হাসান বলেন, আসলে শুরুতেই ভুল করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা যখন বলেন, ছাত্ররা আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে, তখন তো তারা আপার হ্যান্ড হয়ে গেছে। তারা এখন কিছুই মানতে চায় না। তারা মনে করছে তারা যা খুশি তা করতে পারে। আর এখন পর্যন্ত সরকারের দিক থেকে তাদের কোনো স্ট্রং মেসেজও দেয়া হয়নি। ফলে যা হবার তা-ই হচ্ছে। তারা যা খুশি তা-ই দাবি করছে। যে-কোনো বিষয় নিয়ে তারা রাস্তায় নেমে যাচ্ছে। কারণ, তারা দেখেছে ছাত্ররা ঘেরাও করে দাবি আদায় করেছে।

আর পুলিশের বিষয়টি হলো, তারা এখনো ৫ আগস্টের পর  স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। বঞ্চিত অনেক যোগ্য কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সত্য, তবে তাদের অভিজ্ঞতা নেই। তারা ১৫ বছর ধরে কাজে ছিলেন না। পুলিশের যে  ক্রাইম ওয়াচ , গোয়েন্দা তৎপরতা ও অপারেশন এই তিন জায়গায়ই দুর্বলতা আছে। দুটি কলেজের ছাত্ররা একদিন আগে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষে জড়ালো। তাহলে গোয়েন্দারা কী করলো?- প্রশ্ন তার।
তার কথা, গত ১৫ বছরে তো নৈতিকতা শেষ করা হয়েছে। বুড়োদেরই নৈতিকতা নাই, তাহলে ছাত্রদের হবে কীভাবে। ফলে তারা হামলা ও সংঘর্ষের সময় লুটপাটেও জড়িয়ে পড়ছে।

অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা যা বলেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ৫ আগস্টের পর সরাকারি সংস্থা ও পুলিশ এখনো পুরোপুরি সক্রিয় না। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। আর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ছাত্ররা হাই হ্যান্ডেড মুডে আছে।

তার কথা, এখানে তাদের কেউ উসকানি দিচ্ছে কিনা তা-ও দেখা দরকার। তবে এটা নিয়ে ঢালাও উসকানির কথা বলে পরিস্থিতি যেন আড়াল করার চেষ্টা করা না হয়। লুটপাট দেখে মনে হয় এখনো সন্ত্রাসী বা কিশোর গ্যাং ঢুকে গেছে কিনা।

সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল হক মনে করেন, এক শ্রেণির শিক্ষার্থীর মানসিকতা এমন হয়েছে যে তারা ভাংচুর আর মারামারিতে আনন্দ পাচ্ছে। তারা লুটপাটকে বিনোদন হিসেবে নিয়েছে। তারা মনে করছে তাদের থামাবার কেউ নেই। এটা আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি বলেন, এখন যা হচ্ছে তা দেশে এক ধরনের অস্থিরতা ও অরাজকতারই নামান্তর। এর ভিতরে অধিকার আদায় বা বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কিছু নেই। হাসপাতাল ভাঙচুর, সামান্য কারণে সংঘর্ষ- এগুলো তো এক অস্থির সমাজের প্রতিচ্ছবি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়