শাহীন খন্দকার: রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগর বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস এন্ড হসপিটাল (এক্সপানশন প্রজেক্ট) এর ডিপুটি প্রজেক্ট পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক বলেন,এক্সপানশাল অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইয়েন্সেস এন্ড হসপিটাল এর কাজ দদ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, হাসপাতালটির কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালে। এর কাজ শেষ হবে আগামী ২৩ সালে। এখন হাসপাতালের ১৫ তলা ভবণটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যায় ৪৫ হাজার ৯২৯ দশমিক ৭৮ লাখ টাকা। সর্বমোট নির্মাণ ব্যায় টাকার পরিমান, ১২৪,৩১,০২,৮৩৯/৪৮ টাকা। হাসপাতালটি নির্মমানে অর্থায়ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এবং স্বাস্থ্য ওপরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। নকশাটি প্রনয়ন করেছেন স্থাপত্য অধিদপ্তর, গৃহায়ণ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, ১৫ তলা ভবণ পর্যন্ত ইতিমধ্যে কাজের অগ্রগতি সম্পন্ন হয়ে। এখন এর ফিনিশিং কাজ চলমান রয়েছে এবং ফিনিশিংয়ের কাজ সর্ম্পণ হলেই মেশিনারিজসহ অন্যান্য আসবাপত্র ফিটিংয়ের শেষ হলেই চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডা. জহিরুল হক বলেন, অত্যাধুনিক নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউটটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে আগারগাঁওয়ে ২০০৩ সালে পূর্ণাঙ্গ নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।
২০০৯ সালে নিউরোলজি ও নিউরো সার্জারি বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা দেশে প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রম শুরু করা হয়। হাসপাতালটি ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইনস্টিটিউটটি চালু করা হয়। এই হাসপাতালটিতে সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আদলে অপারেশন ও চিকিৎসা সেবায় চালু করা হয়।
অধ্যাপক ডা. জহিরুল হক বলেন, এখানে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি প্রতি বছর নিউরোলজি ও নিউরো সার্জারি বিষয়ক উচ্চতর ডিগ্রি প্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে এই ইনস্টিটিউটটিতে। বর্তমানে এখানে ৪৫০ শষ্যায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নতুন ভবণটি চালু হলেই ৯৫০ শয্যায় উন্নতি হবে। সেই সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসা সেবায় আরো এক দাপ এগিয়ে যাবে বলে জানান তিনি। বর্তমানে আইসিইউ রয়েছে ১২ টি এবং সিসিইউ এসডিইউ বেড রয়েছে ১২টি। সাড়ে ৪শ’ বেডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালের ইমার্জেন্সি, বহির্বিভাগ, আন্তঃবিভাগে সর্বত্র রোগী ও তাদের অভিভাবকদের ভিড়। হাসপাতালটির বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগ বেশ পরিচ্ছন্ন ও খোলামেলা।
কথা হয় মিরপুরের আয়েশা বেগম এর সঙ্গে। তিনি ১০ বছরের ছেলেকে বহির্বিভাগে দেখাতে এসেছেন । তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে আমার ছেলে মাথা ব্যথায় ভুগছে। গ্রীনরোডের বেসরকারি একটি হাসপাতালে দেখিয়েছি। ঐ হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে নিউরো হাসপাতালে এসেছেন তিনি। চলতি বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এই হাসপাতালের চিকিৎসককে দেখিয়েছি। তার পরামর্শে ওষুধ খেয়ে বেশ উন্নতি হয়েছে। এখানে বিভিন্ন টেস্ট করোনার ফি বাইরের তুলনায় অনেক কম বলে জানান আয়েশা বেগম।
ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত টাঙ্গাইলের শহীদ (৬৫) কে নিয়ে এসেছেন তার ছেলে ফরিদ মিঞা। রোগীর একটি হাত সার্বক্ষণিক নড়ে। ফরিদ মিঞা জানান, মাঝারি ধরনের স্ট্রোক আক্রান্ত হওয়ার পর বাবার পারকিনসন দেখা দিয়েছে। সব সময় বাম হাত নড়তে থাকে।
এই প্রকার নিউরো রোগের চুড়ান্ত চিকিৎসা না থাকলেও জটিলতর অবস্থায় যাওয়ার পথ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বেসরকারি হাসপাতালে অনেক ব্যয়বহল। তাই এই হাসপাতালে এসে স্বল্প টাকায় সন্তোষজনক চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন বলে জানান ফরিদ মিঞা।
এসকে/এএ