প্রতিদিন একটি কলা খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, এই সহজলভ্য ফলটির পুষ্টিগুণ কতটা বেশি এবং এটি কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষের জন্য কতটা অপরিহার্য। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, কলা এমন একটি ফল যা দেহে শক্তি জোগায়, হজমে সহায়তা করে এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
১. শিশু-কিশোররা: শরীর ও মস্তিষ্কের দ্রুত বিকাশের জন্য শিশুদের পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজন। কলায় রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ফাইবার, যা শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধিতে সহায়ক।
২. গর্ভবতী নারীরা: গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়োজন হয়। কলা গর্ভবতী নারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফল, কারণ এতে থাকে ফলেট, যা গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র গঠনে সহায়তা করে।
৩. উচ্চ রক্তচাপের রোগী: কলা পটাশিয়ামসমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য প্রতিদিন একটি কলা উপকারী হতে পারে।
৪. খেলোয়াড় ও শরীরচর্চাকারীরা: ব্যায়ামের পরে বা আগে একটি কলা খাওয়া শরীরে দ্রুত শক্তি ফিরে আনতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনির (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ) মিশ্রণ শরীরকে তাৎক্ষণিক এনার্জি দেয়।
৫. কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগা ব্যক্তিরা: কলা প্রাকৃতিক ফাইবারসমৃদ্ধ, যা হজমে সাহায্য করে এবং মল ত্যাগ সহজ করে। নিয়মিত কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হতে পারে।
৬. মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ভোগা মানুষ: কলায় থাকা ট্রিপটোফান নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরে ‘সেরোটোনিন’ উৎপন্ন করতে সাহায্য করে, যা মন ভালো রাখতে কার্যকর।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা জানান, ,কলা খুব সহজলভ্য হলেও এর উপকারিতা ব্যাপক। প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে অনেক সাধারণ শারীরিক সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।
তবে ডায়াবেটিস রোগীদের কলা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ কলায় চিনি থাকে, যা রক্তে গ্লুকোজ বাড়াতে পারে।
একটি সাধারণ ফল হয়েও কলা আমাদের শরীরের জন্য এক অসাধারণ পুষ্টি উপাদান। বিশেষ করে যারা প্রতিদিন শারীরিক ও মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে একটি ছোট কিন্তু কার্যকরী সমাধান। তাই আজ থেকেই কলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে।