বর্তমানে অনেকেই অভিযোগ করেন, খাবার সামনে আনলেই গন্ধ সহ্য হয় না, কিংবা বমি বমি ভাব হয়। এমন অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার পেছনে থাকতে পারে একটি নির্দিষ্ট ভিটামিনের ঘাটতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন বি১২ (Vitamin B12)-এর অভাব হলে এমন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
কেন এমন হয়?
ভিটামিন বি১২ শরীরের স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে ঘ্রাণ এবং স্বাদের অনুভূতি প্রভাবিত হতে পারে। ফলে খাবারের গন্ধে অস্বস্তি, এমনকি বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।
উপসর্গ যেগুলি দেখা দিতে পারে:
খাবারের গন্ধ সহ্য না হওয়া
খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া
অতিরিক্ত ক্লান্তি
মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা
জিভে জ্বালাভাব বা ব্যথা
মুড সুইং বা হতাশা
কারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন?
নিরামিষভোজীরা (Vegetarian)
যাদের হজমজনিত সমস্যা আছে (যেমন: গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটির প্রবণতা)
যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি অ্যান্টাসিড বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ খাচ্ছেন
৫০ বছরের বেশি বয়সীরা
প্রতিকার কী?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করে ভিটামিন বি১২-এর মাত্রা যাচাই করা উচিত। ঘাটতি ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট বা ইনজেকশন গ্রহণ করা যেতে পারে। এছাড়া খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনা দরকার।
ভিটামিন বি১২-সমৃদ্ধ খাবার: ডিমের কুসুম, দুগ্ধজাত খাবার (দুধ, দই, পনির), মাছ (বিশেষ করে টুনা, সালমন), মাংস (গরু, খাসি, মুরগি), লিভার
পুষ্টি ও হরমোন বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময় আমরা ছোট ছোট উপসর্গকে গুরুত্ব দিই না। খাবারের গন্ধে সমস্যা হওয়াও এমন একটি উপসর্গ, যা গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরতে পারলে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি সহজেই পূরণ করা যায় এবং জটিল সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
খাবারের প্রতি বিতৃষ্ণা বা গন্ধ সহ্য না হওয়ার সমস্যা যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে, তাহলে তা হালকাভাবে না নিয়ে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এটি হতে পারে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতির একটি সংকেত।