অনেকেরই খাদ্যগ্রহণের পরপরই মলত্যাগ করার প্রচণ্ড চাপ আসে অথবা ইচ্ছে জাগে। টয়লেটে না যাওয়া পর্যন্ত পেট ব্যথা ও অস্বস্তি হতে থাকে। বিশেষ করে দিনের প্রথম খাবার বা সকালের নাস্তা গ্রহণের পরপরই। এমন অভ্যাস যাদের, তারা কি কোনো রোগে ভুগছেন? খবর: নিউজ২৪
কেন এমন হয়?
এর মূল কারণ হলো শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা গ্যাস্ট্রোকোলিক রিফ্লেক্স নামে পরিচিত। খাবার গ্রহণের পর প্রথমে তা মুখ থেকে খাদ্যনালি হয়ে পাকস্থলীতে পৌঁছায়। পাকস্থলী থেকে স্নায়ুর মাধ্যমে তলপেটে অবস্থিত কোলন বা বৃহদান্ত্র তার মধ্যে জমে থাকা মল বের করে দেওয়ার জন্য স্নায়ুবার্তা প্রেরণ করে, যা গ্যাস্ট্রোকোলিক রিফ্লেক্স নামে পরিচিত। স্নায়ুবার্তা প্রেরণ বা গ্যাস্ট্রোকোলিক রিফ্লেক্সের মূল উদ্দেশ্য, পাকস্থলীতে আগত খাবার গ্রহণ করার জন্য কোলন বা বৃহদন্ত্রের প্রস্তুত রাখা। এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা সবার মধ্যেই কমবেশি দেখা যায়। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রোকোলিক রিফ্লেক্স অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ের থাকে। এই অতি সংবেদনশীলতার কারণে কোনো কিছু খেলেই সঙ্গে সঙ্গে মলত্যাগের ইচ্ছা জাগে।
আপাতসুস্থ মানুষেরও এই সংবেদনশীলতা থাকতে পারে। তবে যেসব ব্যক্তি আইবিএস অথবা আইবিডি রোগে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া অনেক সময় দুধ ও তেল বা চর্বিজাতীয় খাবার খেলে বা ভরপেট খেলে এ সমস্যা দেখা যায়।
পরিত্রাণের উপায় : প্রথমেই জানিয়ে রাখি, এই সমস্যা কোনো রোগ নয়। অনেক সময় সুস্থ ব্যক্তিদেরও সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। সে জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে
১. একবারে পেট ভরে খাবেন না।
২. একবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাবার খাবেন।
৩. যেসব খাবার খেলে সঙ্গে সঙ্গে মলত্যাগের চাপ আসে, শনাক্ত করে সেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৪. পিপারমিন্ট অয়েল জাতীয় ওষুধ খেলে এ সমস্যা থেকে অনেক সময় দূরে থাকা যায়।
৫. প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন।
লেখক: ডা. মো. মুসআব খলিল, পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ