শিরোনাম
◈ ৪৬ ও ৪৭ বিসিএসের লিখিত ও প্রিলি পরীক্ষার সূচি প্রকাশ ◈ হার্টে রিং পরানো হলেও এখনো জটিলতা কাটেনি তামিমের : চিকিৎসক ◈ বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্ত নিয়ে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা?: দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন ◈ ‘জরুরি অবস্থা জারির’ খবর পুরোটাই গুজব: স্বরাষ্ট্র সচিব ◈ জুতা কারখানার কর্মচারীর বাড়ি থেকে সাবেক এমপি গ্রেপ্তার ◈ সন্দ্বীপের কলঙ্ক থেকে আজ মুক্ত হলাম: প্রধান উপদেষ্টা  ◈ নাম মঙ্গল শোভাযাত্রাই থাকছে, দু'দিনব্যাপী বৈশাখ আয়োজন ◈ ১৫ লাখ ই-রিটার্নের ১০ লাখের করযোগ্য আয় নেই : এনবিআর চেয়ারম্যান ◈ জ্ঞান ফেরার পর স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে কথা বলেছেন তামিম ◈ আমার স্বামী দেশের জন্য প্রাণ দিছে, এই তার প্রতিদান?: ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীর মা

প্রকাশিত : ২২ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০২ দুপুর
আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চামড়া কুচকে যায় যে ভিটামিনের অভাবে, প্রতিরোধ ও সমাধান

ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে  ভিটামিনের ভূমিকা অপরিসীম। বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি সরাসরি ত্বকের গঠন, আর্দ্রতা ও ইলাস্টিসিটিকে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে ভিটামিন সি, ই, ডি, এ এবং বি কমপ্লেক্স-এর অভাব ত্বককে শুষ্ক, নিস্তেজ ও কুঁচকে যেতে বাধ্য করে। চলুন বিস্তারিত জানা যাক—

১. ভিটামিন সি: কোলাজেন উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা

ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য। কোলাজেন ত্বকের টানটান ভাব ও ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে।

ঘাটতির লক্ষণ: ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে ওঠা।
প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য হারানো।
সহজে ঘা বা ক্ষত শুকাতে বিলম্ব (সার্ভির লক্ষণ)।

প্রাকৃতিক উৎস: লেবু, আমলকী, পেয়ারা, ক্যাপসিকাম।

গবেষণা: ২০১২ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি-এর অভাবে স্কার্ভি রোগে আক্রান্তদের ত্বকে পেতেকিয়ে (লাল দাগ) এবং দ্রুত বলিরেখা পড়ে। এছাড়া, ১২ সপ্তাহের একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট ত্বকের hydration ৩০% বাড়িয়েছে।

২. ভিটামিন ই: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের শক্তি

ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে ভিটামিন ই। এটি সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি (UV) এবং পরিবেশদূষণের প্রভাব কমায়।

ঘাটতির প্রভাব: ত্বকের আর্দ্রতা কমে যাওয়া।
অকালে বলিরেখা ও ফাইন লাইনস দেখা দেওয়া।
পরিসংখ্যান: ৪০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট দিনে গ্রহণ করলে ফটোড্যামেজ (সূর্যের ক্ষতি) ৪৭% কমে।

উৎস: বাদাম, সূর্যমুখী তেল, অ্যাভোকাডো।

৩. ভিটামিন ডি: ত্বক কোষের পুনর্জন্ম

ভিটামিন ডি ত্বক কোষের বৃদ্ধি, মেরামতি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর অভাব একজিমা, সোরিয়াসিস ও ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়।

প্রাকৃতিক উৎস: সূর্যালোক, ফ্যাটি ফিশ, ডিমের কুসুম।

গবেষণা: ৪৫ জন মহিলার ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম থাকলে ত্বকের বলিরেখা ও হাইপারপিগমেন্টেশন বাড়ে।
২০২১ সালের রিভিউ অনুযায়ী, বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে ভিটামিন ডি সংশ্লেষণ ৫০% কমে, যা অকালবার্ধক্য ডেকে আনে।
 
৪. ভিটামিন এ: ত্বক মেরামতের নায়ক

ভিটামিন এ (রেটিনয়েড) ত্বকের কোষ Renewal প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং প্রদাহ কমায়।

ঘাটতির লক্ষণ: ত্বক খসখসে ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া।
একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো সমস্যা।
ক্লিনিকাল ডেটা: ২০১৫ সালের এক সমীক্ষায়, টপিক্যাল ভিটামিন এ (রেটিনল) ১২ সপ্তাহে বলিরেখা ৩৩% কমিয়েছে।

উৎস: গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক।

৫. বি ভিটামিন: মেটাবলিজম বুস্টার: বি কমপ্লেক্স (বি৩, বি৫, বি৭) ত্বকের মেটাবলিজম ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

প্রভাব: বি৩ (নিয়াসিন) এর অভাবে পেলাগ্রা রোগে ত্বক ফেটে যায়।
বি৫ এর ঘাটতিতে ত্বক লালচে ও শুষ্ক হয়।

উৎস: ডিম, মাংস, সবুজ শাকসবজি।ভিটামিনের ঘাটতি ও ত্বকের প্রভাব

ত্বকের সমস্যা সমাধানে জরুরি একটি চার্ট-

ভিটামিন   ঘাটতির লক্ষণ       উৎস    

সি    কুঁচকে যাওয়া, স্কার্ভি    লেবু    
ই    ফটোড্যামেজ, শুষ্কতা    বাদাম    
ডি    একজিমা, বলিরেখা    সূর্যালোক    
এ    একজিমা, খসখসে ত্বক    গাজর    
বি৩    পেলাগ্রা, ডার্মাটাইটিস    মাংস    

প্রতিরোধ ও সমাধান : ১. সুষম খাদ্য: প্রতিদিনের ডায়েটে ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল, শাকসবজি, বাদাম অন্তর্ভুক্ত করুন।
২. সানস্ক্রিন ব্যবহার: UV রশ্মি থেকে ভিটামিন ই কে রক্ষা করুন।
৩. সাপ্লিমেন্ট: ডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন ডি/সি সাপ্লিমেন্ট নিন।

ত্বকের কুঁচকে যাওয়া রোধ করতে ভিটামিন সি এবং ই-এর ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো কোলাজেন উৎপাদন ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে ত্বককে টানটান রাখে। পাশাপাশি, ভিটামিন ডি ও এ-এর ঘাটতি পূরণ করলে ত্বকের বার্ধক্য ধীরগতি পায়। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার আর সচেতন জীবনযাপনই পারে ত্বককে সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়